করোনায় আক্রান্ত হয়ে সাতক্ষীরা জেলায় গত ৯ মাসে ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে ৬ হাজার ৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১ হাজার ১৫৮ জনের করোনা পজিটিভ ও ৪ হাজার ৮৩৬ জনের নেগেটিভ রিপোর্ট পাওয়া গেছে। বুধবার (১৩ জানুয়ারি) সাতক্ষীরা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে করোনা ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আয়োজিত কর্মশালায় এই তথ্য জানানো হয়।
কর্মশালায় বলা হয়, সাতক্ষীরা জেলায় করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু ঘটেছে ১৪০ জনেরও অধিক মানুষের। অপরদিকে এই সময়ের মধ্যে ১০৬ জন স্বাস্থ্যকর্মী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে চিকিৎসক ছিলেন ২২ জন, নার্স ছিলেন ১৯ জন এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী ৬৫ জন। করোনা ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে কর্মশালায় আরো বলা হয়, বাংলাদেশে এ পর্যন্ত মৃত্যুর হার আক্রান্তের শতকরা ১ ভাগেরও কম।
কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন শাফায়েত, ডা. সাইফুল্লাহ কাফি, ডা. পুলক কুমার চক্রবর্তী ও শাহীনুর খাতুন।
কর্মশালায় বক্তারা বলেন, করোনা ও ডেঙ্গ সংক্রামক ব্যাধি। এ ব্যাধি থেকে মুক্তি পেতে হলে পর্যাপ্ত সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার। করোনার শুরুতে সর্দি, জ¦র, শুকনো কাশি, গলায় ব্যথা, ডায়রিয়া, আঙ্গুল ও পায়ের পাতা ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়াসহ নানা উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এমন ক্ষেত্রে অবশ্যই আক্রান্ত ব্যক্তিকে আইসোলেশনে রেখে কমপক্ষে ১৪ দিন চিকিৎসা দিতে হবে।
এসময় তার সংস্পর্শে কেউ গেলে তিনিও আক্রান্ত হতে পারেন উল্লেখ করে কর্মশালায় আরও বলা হয়, রোগীর মানসিক অবস্থা শক্ত রাখার জন্য তার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধপত্র ব্যবহার করা উচিত। এমনকি রোগীর জন্য পৃথক বাথরুমের ব্যবস্থা করলেও ভাল হয়।
সভায় বাংলাদেশে অসংক্রামক ব্যাধিতে ৬২ শতাংশ রোগী মারা যাচ্ছে এমন তথ্য উল্লেখ করে সিভিল সার্জন বলেন, ৬৪ জেলায় ১২৮টি আদর্শ গ্রাম রয়েছে। এসব গ্রামে পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্যসেবার যাবতীয় ব্যবস্থা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে আরও বলা হয়, খোলা জায়গায় মলত্যাগ না করা, বিশুদ্ধ পানি ব্যবহারসহ নানা বিষয় রয়েছে এর মধ্যে। ইউনিয়ন পর্যায়ের কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমেও তাদের সেবা দেওয়া হয়ে থাকে।
সাতক্ষীরার সকল বিদ্যালয়ে খুদে ডাক্তারের চিকিৎসা চালু রয়েছে উল্লেখ করে কর্মশালায় আরও বলা হয়, পোশাক শিল্প, স্বাস্থ্যসেবা সংস্থা এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যশিক্ষার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। এসবের মাধ্যমে করোনা ভাইরাস এবং ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা সম্ভব। তাছাড়া মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার, হাঁচিকাশি ও থুতু থেকে নিজেকে সতর্ক রাখা এবং অন্যকেও সতর্ক করাসহ নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলারও আহবান জানানো হয়। কর্মশালায় সাতক্ষীরার সাংবাদিকরা অংশগ্রহণ করেন।
খুলনা গেজেট/এ হোসেন