সাতক্ষীরায় সড়ক-মহাসড়কে অবৈধ ইঞ্জিনচালিত যান বন্ধের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ডাকা বাস ধর্মঘট ৮ ঘন্টা পর প্রত্যাহার করা হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করে শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টার দিকে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।
এর আগে শনিবার সকাল থেকে সাতক্ষীরার ৬টি রুটে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়। আকস্মিক এই ধর্মঘটে সীমাহীন দূর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা।
সাতক্ষীরা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরা-খুলনা, সাতক্ষীরা-কালিগঞ্জ,সাতক্ষীরা-যশোর, সাতক্ষীরা-চাপড়াসহ ৬টি রুটে বাস চলাচল বন্ধ করা হয়। এর আগে, বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরা-আশাশুনি সড়কের বুধহাটায় সাইড না দেওয়াকে কেন্দ্র করে মাহেন্দ্র চালকদের সাথে বচসা হয় বাস চালকদের। এক পর্যায়ে জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি সহিদুল ইসলামকে মারধর করে মাহেন্দ্র চালকরা।
এছাড়া জেলার সড়ক-মহাসড়কে দাপিয়ে বেড়ায় লক্ষাধিক নসিমন-করিমন-ইজিবাইক-মাহেন্দ্রসহ অবৈধ যানবাহন। এসব অবৈধ যানবাহন বন্ধের দাবিতে জেলাব্যাপী বাস ধর্মঘট ডাকে জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন। তবে হঠাৎ করে বাস ধর্মঘট ডাকায় যাত্রীরা পড়েছিলেন চরম দূর্ভোগে।
সাতক্ষীরার বৈকারী এলাকার আব্দুল হান্নান জানান, তিনি খুলনা থেকে এসেছেন। বাস বন্ধ তা বুঝতে পারেননি। আর বুঝলেও কিছু করার ছিলনা। পঞ্চাশ টাকার জায়গায় বিভিন্ন বাহনে আসতে তাকে ৩শ’ টাকা খরচ করতে হয়েছে। তাছাড়া সময় লেগেছে ৪ ঘন্টারও বেশি।
ধর্মঘট প্রত্যাহারের বিষয়ে মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আরশাদ আলী খোকা বলেন, ‘অবৈধ যানবাহনের অবৈধ চালকেরা শ্রমিক নেতা ও বাস চালকের মারধর করবে, এটা মানা যায়না। আমরা সড়ক-মহাসড়কে অবৈধ যানবাহন বন্ধের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট ডেকেছিলাম। তবে দুপুরে এসব বিষয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে ফলপ্রসু আলোচনা হয়েছে। তাই বিকেল থেকে আমরা আবারও বাস চালানো শুরু করেছি।’
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুর রহমান জানান, ‘বাস চালক সহিদুল ইসলামকে মারধরের বিষয়ে প্রতিকারের আশ্বাস পাওয়া গেছে। এছাড়া অবৈধ যান বন্ধে ধাপে ধাপে কাজ করবে প্রশাসন, এমন আশ্বাসে আমরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছি।’
বাস মালিক আব্দুল মুহিদ বলেন, ‘অবৈধযান জেলাব্যাপী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে, যা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে না। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় কোন মালিক সমিতি নেই। মালিক সমিতিতে তালা মারা। মালিক সমিতির সুষ্ঠ একটা নির্বাচন হলে তারা অনেক সমস্যার সমাধান করতেন। অবৈধ যানের দাপটে বাসে যাত্রী ওঠেনা। ইজিবাইক, মাহেন্দ্র, ইঞ্জিনভ্যানের দাপটে বাসের কোন আয় নেই। আমরা সরকারি যত ট্যাক্স আছে দিচ্ছি। কিন্ত অবৈধ যানের চালকদের কোন কাগজপত্র নেই। তাদের দেখার কেউ নেই।’ তবে প্রশাসনের আশ্বাসে ধর্মঘট প্রত্যাহারে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন তিনি।
সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সড়ক-মহাসড়কে অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধে পুলিশ পদক্ষেপ নেবে। তিনি আরও বলেন, শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সাথে ফলপ্রসু আলোচনা হয়েছে। তারা ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছেন।
খুলনা গেজেট/ এস আই