সাতক্ষীরার তালায় বাণিজ্যিকভাবে উচ্চ ফলনশীল রকমেলন চাষ শুরু হয়েছে। অল্প সময়ে ও স্বল্প দিনে এই চাষ লাভবান হওয়াতে রকমেলন চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছে এলাকার অনেক কৃষক।
তালা উপজেলার নগরঘাটা গ্রামের কৃষক হান্নান মোড়ল উন্নয়ন প্রচেষ্টা ও পল্লী কর্ম-সাহয়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর সহযোগিতায় ২০ শতক জমিতে এ বছর সর্বপ্রথম বুলেট জাতের রকমেলন বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু করেন। রদকমেলন মাস্কমেলন গোত্রের একটি উচ্চমূল্যের বিদেশি ফল। ফলের উপরের ত্বক পাথর (রক) এর মত, তাই এটি বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নামে পরিচিত। পুষ্টিগুণে রকমেলন অনন্য। বিভিন্ন এন্টি-অক্সিডেন্ট সম্পন্ন এই ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ এবং সি, যা উচ্চ রক্তচাপ, এজমা কমিয়ে দেয়। এতে উপস্থিত বেটা ক্যারোটিন ক্যান্সার রোধ করে।
কৃষক হান্নান মোড়ল জানান, ইউটিউবের দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজের ২০ শতাংশ জমিতে রকমেলন চাষ করেছিলাম। মাত্র ৪৫ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার ফল বিক্রয় করেছি। প্রতি কেজি ফলের বর্তমান বাজার মূল্য ৭০ টাকা তবে আরও কিছুদিন আগে বাজার মূল্য ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রয় হয়েছিলো। মাত্র ২ মাসে ভেতরে চারা রোপন থেকে শুরু করে ফসল কর্তন করা যায়। প্রতিটি রেকমেলন ২ থেকে ৩ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। উন্নয়ন প্রচেষ্টার কৃষি ইউনিট এই চাষে বিভিন্ন উপকরণ যেমন বীজ, মালচিং পেপার, জৈব সার ক্রয়ে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা করেছে।
উন্নয়ন প্রচেষ্টার কৃষি অফিসার মো. নয়ন হোসেন বলেন, রকমেলন একটি বাঙ্গি জাতীয় ফসল। এটি বেশ লাভজনক। বর্তমানে প্রতি কেজি রকমেলন ৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে স্থানীয় বাজার এই চাহিদা না থাকলেও ঢাকায় এর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এই ফসল সল্প দিনে বাজারজাত করা যায় চারা লাগানোর প্রায় ৮০ দিন অর্থাৎ আড়াই মাসে ফল হারবেস্ট করা যায়। কৃষক হান্নান মোড়লের রকমেলন চাষ এই এলাকায় কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। আগামীতে অনেক কৃষক রকমেলন চাষ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম জানান, রকমেলন একটি স্বল্পমেয়াদী লাভজনক ফসল। এটি এবছর প্রথম সাতক্ষীরা জেলায় চাষাবাদ হয়েছে। বর্তমানে প্রতি কেজি রকমেলন ৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। যা গত রমজান মাসে ১২০ থেকে ১৫৫ টাকা বিক্রি হয়েছে। ধীর ধীরে অন্য কৃষকরা রকমেলন চাষে আগ্রহী হয়ে উঠবেন বলে আশা করি।