‘সকলে মিলে উৎপাদন ও পুষ্টি নিশ্চিত করে টেকসই খাদ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলি’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভা মঙ্গলবার সাতক্ষীরা শহরের আমতলা মোড়স্থ উন্নয়ন সংগঠন স্বদেশ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। স্বদেশ এর জেলা কমিটির সভাপতি বেগম মরিয়ম মান্নানের সভাপতিত্বে সভায় ধারণাপত্র পাঠ করেন কমিটির সাধারন সম্পাদক মাধব চন্দ্র দত্ত।
এতে আলোচনা করেন উন্নয়ন কর্মি অপরেশ পাল, আবুজাফর সিদ্দিকী, সাবেক কাউন্সিলর ফরিদা আকতার বিউটি, নারী নেত্রী ফজিলা বেগম, শিবুপদ বৈদ্য, জ্যোৎস্না দত্ত, জোছনা আরা বেগম, আফজাল হোসেন প্রমুখ।
সভায় বলা হয়, মে মাসে আম্ফানের আঘাত এবং পরবর্তীতে জুলাই মাসে উত্তরবঙ্গ ও ঢাকা বিভাগের মধ্যাঞ্চলে বন্যার ভয়াবহ প্রকোপ, যার ক্ষীণ ধারা এখনো অব্যাহত আছে। সরকারি হিসাবে, দীর্ঘ সময় ধরে স্থায়ী এবারের বন্যায় দেশের উত্তর দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলসহ প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ডুবে গেছে এবং অর্ধকোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকাগুলোর রাস্তা-ঘাট, ব্রীজ, কালভার্ট এবং অন্যান্য অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। নদী ভাঙ্গনের ফলে কয়েক হাজার ঘর-বাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা পানিতে বিলীন হয়ে গেছে। অনেক মানুষ সহায় সম্বলহীন হয়ে পড়েছে। বিগত কয়েক সপ্তাহ দেশব্যাপী চাল, পেঁয়াজ, সবজিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির দাম বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে আগামীতে দাম আরো বৃদ্ধি পাওয়ার আশংকায় রয়েছে সাধারণ মানুষ। বছরের শুরু থেকে চালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার ধারাবাহিকতায় সব ধরণের চালের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন প্রকার সবজি, পেয়াঁজ, চিনি, সয়াবিন তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
সভায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর খাদ্য ও পুষ্টি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি সুপারিশ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে নির্ভরযোগ্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সংখ্যায় করোনা পরীক্ষা ও চিকিৎসার পাশাপাশি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে নব-আবিষ্কৃত ভ্যাকসিন পাওয়ার জন্য জরুরি যোগাযোগ এবং অর্থের বরাদ্দ নিশ্চিত করা, নগর ও গ্রামে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর খাদ্য ও পুষ্টি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে উপকারভোগীদের সুনির্দিষ্ট তালিকা প্রস্তুত করে আগামী ১ বছরের জন্য সংশ্লিষ্টদের রেশনিং এর মাধ্যমে স্বল্প মূল্যে জরুরী খাদ্য নিশ্চিত করা, কৃষকদের জন্য বরাদ্দ প্রণোদনা বাবদ ৩ হাজার কোটি টাকা এখনো সম্পূর্ণ বিতরণ হয়নি। খাদ্য উৎপাদন নিশ্চিত করার জন্য যত দ্রুত সম্ভব বরাদ্দের টাকা বিতরণের পাশাপাশি নতুন করে অর্থ বরাদ্দ করা, করোনা, আম্ফান ও বন্যার ফলে ক্ষতিগ্রস্থ প্রাণীসম্পদ ও মৎস্য খাতে ছোট এবং মাঝারী উদ্যোক্তাদের সরকারের পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আর্থিক প্রণোদনা নিশ্চিত করা (যার বেশীরভাগ তাদের কাছে পৌঁছায়নি) এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রসমূহে নতুন করে বিনিয়োগ করা।
সভায় বৈশ্বিক করোনা কালিন সময়ে খাদ্যের গুণমান বজায় রাখা ও পুষ্টিমান সম্পন্ন খাদ্য নিশিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহবান জানানো হয়।
খুলনা গেজেট/এনএম