সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কুচপুকুর এলাকা থেকে তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রকে অপহরণের পর হত্যার অভিযোগ আশরাফুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ চাঁদ মোহাম্মদ আব্দুল আলিম আল রাজী সোমবার (২ অক্টোবর) দুপুরে এক জনাকীর্ণ আদালতে এই রায় ঘোষণা করেন। তবে পলাতক থাকায় আসামী ইসলাম আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলে না।
মৃত্যুদণ্ডের আদেশপ্রাপ্ত আসামী আশরাফুল ইসলাম সাতক্ষীরার তালা উপজেলার সুভাষিনী গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কুচপুকুর গ্রামের জিয়াউর রহমানের ছেলে রিয়াদ হোসেন কদমতলার একটি কিন্ডারগার্টেনের তৃতীয় শ্রেনিতে পড়তো। আশরাফুল ইসলাম মাঝেমধ্যে জিয়াউর রহমানের বাড়িতে যাতায়াত করতো। পরিচয়ের সূত্র ধরে সে জিয়াউর রহমানের মেয়েকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু পারিবারিকভাবে বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হলে আশরাফুল প্রতিশোধ নেওয়ার উপায় খুঁজতে থাকেন।
এক পর্যায়ে ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর রিয়াদকে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়ে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে মৃত্যু দেহ সদর উপজেলার বলাডাঙ্গা ফুটবল মাঠে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় আশরাফুল। পরের দিন সকালে বলাডাঙ্গা ফুটবল মাঠ থেকে রিয়াদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই দিন রাতে রিয়াদের পিতা জিয়াউর রহমান বাদি হয়ে আশরাফুল ইসলামকে আসামী করে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-৩৪।
মামলার তদন্ত শেষে সদর থানার এসআই হুমায়ুন কবির ২০১৬ সালের ১৪ জুলাই আশরাফুল ইসলামকে আসামী করে আদালতে চার্জশীট প্রদান করেন।
মামলাটি বিচারের জন্য উক্ত আদালতে প্রেরিত হলে বিচারক পুলিশের দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদন ও ১৭জন সাক্ষীর মধ্যে ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ ও মামলার প্রয়োজনীয় নথি পর্যালোচনা শেষে আসামী আশরাফুল ইসলামকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন।
আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন এ্যাড. রোকনুজ্জামান। সরকারের পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন পিপি অ্যাডঃ আব্দুল লতিফ।
সাতক্ষীরা আদালতের সরকারি কৌশলী অ্যাডঃ আব্দুল লতিফ জানান, শিশুকে অপহরণের পর হত্যার ঘটনায় করা মামলায় আসামীকে মৃত্যুদন্ড দেওয়ায় রাস্ট্রপক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করছে।
খুলনা গেজেট/ টিএ