সাতক্ষীরায় জামাইয়ের উপর্যপুরি ছুরিকাঘাতে শাশুড়ি মোমেনা খাতুন নিহত ও তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী হালিমা খাতুন গুরুতর আহত হয়েছে। শুক্রবার (১৬ জুলাই) ভোর রাত সাড়ে ১২টার দিকে সদর উপজেলার গাজীপুর গ্রামে এঘটনা ঘটে। ছুরিকাঘাতে আহত শাশুড়ি মোমেনা খাতুন সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার (১৭ জুলাই) ভোর রাত দেড়টার দিকে মারা গেছে। পুলিশ ঘাতব জামাই আব্দুল মতিনকে গ্রেপ্তার করেছে।
এদিকে গুরুতর অহত হালিমা খাতুন শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন আছে। তার অবস্থা আশংকাজনক।
জামাইয়ের ছুরিকাঘাতে নিহত মোমেনা খাতুন (৫২) সাতক্ষীরা সদর উপজেলার গাজীপুর গ্রামের গোলাম হোসেনের স্ত্রী।
নিহতের ছেলে ফিরোজ হোসেন জানান, প্রায় ১৫ বছর আগে সদর উপজেলার পায়রাডাঙ্গা গ্রামের নেছার আলীর ছেলে আব্দুল মতিনের (৩৫) সাথে আমার বোন হালিমা খাতুনের (৩০) বিয়ে হয়। তাদের ১৩ বছর বয়সী মুন্নি নামের একটি মেয়ে আছে। বেশ কিছুদিন ধরে বোনাই মতিন আমার বোন হালিমা খাতুনের উপর শারিরীক ও মানষিক নির্যাতন চালাচ্ছিল। এখন থেকে ১৫দিন আগে আমিসহ পরিবারের কয়েকজন বোনাই মতিনের বাড়িতে যাই এবং বোনকে কিছুদিনের জন্য আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসার কথা বলি। কিন্তু মতিন জানায় বোনকে নিতে হলে একেবারে তালাক করিয়ে নিয়ে যেতে হবে। একপর্যায় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সমঝোতার ভিত্তিতে তালাক করিয়ে ভাগ্নি মুন্নি (১৩)সহ বোন হালিমাকে আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসি।
ফিরোজ হোসেন আরো বলেন, বোনকে বাড়িতে নিয়ে আসার পর মতিন প্রায়ই আমার মায়ের কাছে ফোন করে বোনকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে। কিন্তু আমার মা মোমেনা খাতুন তার কথায় রাজি হয়না।
একপর্যায় শুক্রবার ভোর রাত সাড়ে ১২টার দিকে বোনাই মতিন গোপনে আমাদের বাড়িতে এসে মা’ বোন ও ভাগ্নি যে ঘরে ঘুমিয়ে ছিল ওই ঘরে ঢুকে মা ও বোনকে উপর্যপুরি ছুরিকাঘাত করতে থাকে। এসময় আমি অন্য ঘরে আমার মৃত্যুশয্যায় থাকা বৃদ্ধ বাবা’কে সুরা ইয়াসিন পাঠ করাচ্ছিলাম। এসময় মা ও বোনের আত্মচিৎকার শুনে দৌড়ে ওই ঘরে গেলে ছুরি হাতে মতিন দ্রুত চলে যায়। আমি ঘরে ঢুকে দেখি মায়ের পেটের নাড়িভুড়ি বেরিয়ে গেছে। বোনের পেটেও ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। স্থানীয়দের সহায়তায় দ্রুত তাদেরকে উদ্ধার করে রাতেই সদর হাসপাতালে ভর্তি করাই। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ভোর রাত দেড়টার দিকে মা মারা যায়। উন্নত চিকিৎসার জন্য জন্য বোন হালিমাকে সদর হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়ায় তাকে শহরের খুলনা রোড মোড়ে হার্ট ফাউন্ডেশন নামের একটি ক্লিনিকে ভর্তি করিয়েছি। তার অবস্থাও আশংকাজনক বলে তিনি জানান।
সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দেলোয়ার হুসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ঘাতাক জামাই আব্দুল মতিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
খুলনা গেজেট/ টি আই