কর্মচারির সহায়তায় মালিকের চেক হাতিয়ে নিয়ে সাক্ষর ও সিল জালিয়াতির অভিযোগে সাতক্ষীরা শহরের ইটাগাছা এলাকার সুব্রত বিশ্বাসের দায়েরকৃত মামলায় সদর উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের সহকারি ইনসট্রাক্টর ইয়াছিন আলীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে সমন জারির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। রোববার (১৭ অক্টোবর) সাতক্ষীরার মুখ্য বিচারিক হাকিম মোঃ হুমায়ুন কবীর সিআইডি’র তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা শেষে এ আদেশ দেন।
আসামীরা হলেন, সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বড়দল গ্রামের মৃত আবু বক্কর ছিদ্দিকের ছেলে ও শহরের মুনজিতপুর এলাকায় বসবাসকারি সদর ইউআরসি’র সহকাাির ইনসট্রাক্টর ইয়াছিন আলী, খুলনার লবনচোর থানাধীন আব্দুর রশীদ মোল্লার ছেলে জিয়ারুল হক ও পুরাতন সাতক্ষীরা এলাকার শফিকুল ইসলামের ছেলে শরিফুল ইসলাম।
মামলা ও ঘটনার বিবরণে জানা যায়, শহরের কামাননগরের আমিনুর রহমান বকুলের মাধ্যমে ইটাগাছার বৈদ্যনাথ বিশ্বাসের ছেলে পলাশপোলের অটো পয়েন্টের স্বত্বাধিকারী সুব্রত বিশ্বাসের সঙ্গে পরিচয় ঘটে সদর ইউআরসি ও আশাশুনি উপজেলার বড়দল গ্রামের মৃত আবু বক্কর ছিদ্দিকের ছেলে ইয়াছিন আলীর। বাড়ি বিক্রি নিয়ে ইয়াছিন আলীর সঙ্গে অটো পয়েন্টের মালিক সুব্রত বিশ্বাসের বিরোধ চলে আসছিল। এ কারণে ইয়াছিন আলী অটো পয়েন্টের ম্যানজার শরিফুল ইসলাম চয়নকে ম্যানেজ করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ড্রয়ারে থাকা সুব্রত বিশ্বাসের সাতক্ষীরা সদরের পূবালী ব্যাংকের শাখার চলতি হিসাব ১৯২৩ এর সিএস-১০০-এ-০৬৮৩২৫৩ নং চেক ২০১৯ সালের মার্চ মাসের আগে বা পরে চুরি করে নিয়ে যান। শরিফুল ইসলাম চয়ন ও ইয়াছিন আলী যোগসাজস করে জিয়ারুল হককে দিয়ে খুলনা মহানগর মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে ৫০ লাখ টাকার চেক ডিজঅনারের মামলা করান। চেক এর তারিখ, বাংলায় লেখা টাকার পরিমান ও সুব্রত বিশ্বাসের সাক্ষর জাল করা হয় বলে অভিযোগ। এ ঘটনায় সুব্রত বিশ্বাস সাতক্ষীরার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে গত বছরের ৯ মার্চ ইয়াছিন আলী, জিয়ারুল হক ও শরিফুল ইসলাম চয়নের নামে জালিয়াতির মামলা করেন সুব্রত বিশ্বাস। আদালত মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দেন।
সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক পারুল খাতুন চেক চুরি ও জালিয়াতির অভিযোগ সত্য বলে গত ১১ এপ্রিল আদালতে প্রতিদেন দাখিল করেন। গত ২৮ সেপ্টেম্বর ধার্য দিনে পারুল খাতুনের জমা দেওয়া প্রতিবেদনের নীচের লাইনে সাদা কালি দিয়ে ঘসা মাজা করা হয়েছে এমন দেখে আগামি ১৭ অক্টোবর ধার্য দিনের মধ্যে তদন্তকারি কর্মকর্তাকে নতুন করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন বিচারক। সে অনুযায়ি প্রতিবেদন পাওয়ার পর পর্যালোচনা শেষে মুখ্য বিচারিক হাকিম মোঃ হুমায়ুন কবীর রোববার ইয়াছিন আলীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে সমন জারির নির্দেশ দেন।
বাদিপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. আব্দুল খালেক জালিয়াতির মামলায় ইয়াছিনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে সমন জারির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
খুলনা গেজেট/এএ