সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অক্সিজেন সংকটের কারণে কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে ৭ জন রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। খুলনা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডাঃ রাশেদা সুলতানা কর্তৃক গঠিত দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি রোববার (৪ জুলাই) সামেক হাসপাতালে সরেজমিনে উপস্থিত হয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করেন।
তদন্ত কমিটির প্রধান হলেন খুলনা মেডিকেল সাবডিপোর সহকারী পরিচালক ডাঃ রফিকুল ইসলাম গাজী। কমিটির অপর সদস্য হলেন মোংলা পোর্ট স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মোশাররফ হোসেন। তদন্ত কমিটি সামেক হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, রোগী ও রোগীর আত্মীয় স্বজনসহ দায়িত্ব সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলবেন বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, গত ৩০ জুন বুধবার সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে রাত ৮টার মধ্যে অক্সিজেন সংকটের কারণে আইসিইউ, সিসিইউ এবং সাধারণ করোনা ওয়ার্ডে উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন ৭ জন রোগী মারা যান। মৃতদের প্রথম ৪ জন ছিলেন করোনা পজিটিভ। দুপুরের পর থেকে সামেক হাসপাতালে অক্সিজেন সংকট দেখা দিলে ডাক্তাররা কর্তৃপক্ষকে তা অবহিত করেন। কিন্তু যথা সময়ে সাতক্ষীরার সেন্ট্রাল অক্সিজেন পন্ড পূরণ না করায় অক্সিজেনের প্রেসার কমতে থাকায়। একপর্যায়ে এর লেভেল কমে যাওয়ায় সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে রাত ৮টার পর্যন্ত সেখানে চিকিৎসাধীন রোগীরা পর্যাপ্ত অক্সিজেন না পেয়ে সংকটের মধ্যে পড়ে। এসময় যে যার মতো অক্সিজেন সিলিন্ডার বাইরে থেকে নিয়ে এসে রোগীদের বাঁচানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এসময় রাত ৮টার মধ্যে ৭ জন রোগী মারা যান। এর আগে ওইদিনই করোনা উপসর্গে আরও ৮ জনসহ মোট ১৪ জনের মৃত্যু ঘটে।
এ ঘটনায় সাতক্ষীরা সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ কুদরত ই খুদা হাসপাতালে মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডাঃ কাজী আরিফ আহমেদকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। এই কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, ডাঃ সাইফুল্লাহ ও ডাঃ মারুফ। তিন কার্যদিবসের মধ্যে এই কমিটির প্রতিবেদন দেয়ার জন্য বলা হয়।
পরের দিন খুলনা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডাঃ রাশেদা সুলতানা খুলনা মেডিকেল সাবডিপোর সহকারী পরিচালক ডাঃ রফিকুল ইসলাম গাজীকে প্রধান করে দুই সদস্যের আরো একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটির অপর সদস্য হলেন মোংলা পোর্ট স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মোশাররফ হোসেন।
সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন শাফায়াত বলেন, খুলনা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডাঃ রাশেদা সুলতানা কর্তৃক গঠিত দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি রোববার (৪ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১ টার পর থেকে সরেজমিনে সামেক হাসপাতালে এসে তদন্ত শুরু করেছেন। তারা হাসপাতালে সেদিন দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলছেন। তদন্ত কমিটির অনুসন্ধানে এই মৃত্যুর কারণ বেরিয়ে আসবে বলে আমরা আশা করছি।
খুলনা গেজেট/এনএম