আগামী ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচন। এ লক্ষ্যে যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন। এরই মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ।
সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক হারুন উর রশীদ বলেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ১৪টির মধ্যে ১৩টি ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। মেয়াদ শেষ না হওয়ায় আলীপুর ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডের ঘোষণা অনুযায়ী সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে নতুন মুখ এসেছে ৬ টিতে। বাকি ৭টিতে রয়েছেন আগের নির্বাচিত চেয়ারম্যানরা।
আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থীরা হলেন, বাঁশদহ ইউনিয়নে মফিজুর রহমান, কুশখালী ইউনিয়নে তাজুল ইসলাম, বৈকারী ইউনিয়নে আসাদুজ্জামান অসলে, ঘোনা ইউনিয়নে ফজলুর রহমান, শিবপুর ইউনিযনে শওকত আলী, ভোমরা ইউনিয়নে শহিদুল ইসলাম, ধুলিহর ইউনিয়নে মিজানুর রহমান (বাবু সানা), ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়নে আলাউদ্দিন, আগরদাড়ি ইউনিয়নে মইনুল ইসলাম, ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়নে আজমল হোসেন, লাবসা ইউনিয়নে নজরুল ইসলাম, বল্লী ইউনিয়নে বজলুর রহমান ও ফিংড়ি ইউনিয়নে সামছুর রহমান।
জেলা অওয়ামীলীগের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, সদর উপজেলার বাঁশদহা ইউপিতে মফিজুর রহমান, কুশখালীতে তাজুল ইসলাম, শিবপুরে শওকত আলী, ব্রহ্মরাজপুরে আলাউদ্দিন, আগরদাড়িতে মইনুল ইসলাম ও লাবসা ইউনিয়নে নজরুল ইসলাম নতুন মুখ হিসেবে পেয়েছেন নৌকার টিকিট। গত নির্বাচনে বাঁশদহা থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের এসএম মোশারফ হোসেন। এবার তিনি মনোনয়ন দৌড়ে তালিকা থেকে ছিটকে পড়েছেন। একই অবস্থা কুশখালিতেও। কুশখালি ইউনিয়নে গত নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন শফিকুল ইসলাম শ্যামল। তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকায় এবার নৌকার টিকিট পাননি তিনি। শিবপুরে বিএনপির আব্দুল মজিদ বিজয়ী হয়েছিলেন। ভোমরায় নির্বাচিত হয়েছিলেন জাতীয় পার্টির ইসরাইল গাজী। ব্রহ্মরাজপুরে জিতেছিলেন বিএনপির স.ম শহিদুল ইসলাম। আগরদাড়িতে আওয়ামী লীগের মজনুর রহমান মালি জয়লাভ করলেও এবার তিনি নৌকার টিকিট পাননি। লাবসায় গত নির্বাচনে জিতেছিলেন বিএনপির আব্দুল আলিম।
সূত্রমতে, গত নির্বাচনে পরাজিতদের মধ্যে শিবপুরের শওকত আলী ও ভোমরার শহিদুল ইসলাম এবার নৌকার টিকিট পেয়েছেন। বাকী ৪টি ইউনিয়নে নতুন প্রার্থী দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
দলের মনোনীত নেতাদের পাশাপাশি বিদ্রোহীও প্রার্থী হতে পারেন বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। তবে, সম্ভাব্য বিদ্রোহী প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের কেন্দ্র থেকে কঠোর হুঁশিয়ারি দেওয়া হচ্ছে। অতীতে হুঁশিয়ারি দেওয়ার পরও বিদ্রোহীদের দমাতে পারেনি ক্ষমতাসীন দলটি। এখন প্রশ্ন উঠছে এবার বিদ্রোহীদের লাগাম টেনে ধরতে কী করবে আওয়ামী লীগ?
এদিকে, আগের বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না-নেওয়া, স্থানীয় পর্যায় রাজনীতিতে প্রভাব ধরে রাখা ও প্রভাবশালী নেতাদের প্রশ্রয়ে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ নিচ্ছেন বিদ্রোহীরা। এছাড়া, ভুল প্রার্থীর নাম কেন্দ্রে পাঠানোর অভিযোগও রয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের অনেকেই মনে করছেন, স্থানীয় প্রভাব বিরাজমান রাখা ছাড়াও কেন্দ্রের সঙ্গে তৃণমূলের যোগাযোগ ভালো না থাকায় বিদ্রোহী প্রার্থী হচ্ছেন অনেকেই। আবার তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ গ্রুুপিংয়ে একদিকে যেমন দল হারাচ্ছে জনপ্রিয়তা, অন্যদিকে অভিমানে দূরে সরে যাচ্ছেন দলের ত্যাগী, ও পরিশ্রমী নেতারা।
খুলনা গেজেট/এনএম