খুলনা, বাংলাদেশ | ১৮ ফাল্গুন, ১৪৩১ | ৩ মার্চ, ২০২৫

Breaking News

  রাজধানীর শাহজাদপুরের আবাসিক হোটেলে অগ্নিকাণ্ডে চারজনের মৃত্যু
  সাবেক ভূমি মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের দুই মামলা
  প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ বাতিলের রায় স্থগিত : আপিল বিভাগ
  রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে ট্রাকের সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সের সংঘর্ষে নিহত ৩
  জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার খালাসের রায় বহাল

সাতক্ষীরায় জমি অধিগ্রহণ না করে খাল খননের অভিযোগ, ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরার ভবানীপুর এলাকায় জমি অধিগ্রহণ না করে ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমি কেটে খাল খনন করার অভিযোগ উঠেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বিভাগ-১ এর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।

এদিকে জমি অধিগ্রহণ পূর্বক ক্ষতিপূরণের টাকা না পাওয়া পর্যন্ত খাল খননসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন জমির মালিকরা। জমি অধিগ্রহণ না করে, ক্ষতিপূরণ না দিয়ে খাল খনন কার্যক্রম শুরু করায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী খনন কাজ বন্ধ করে দিলেও তা মানছেন না ঠিকাদার কর্তৃপক্ষ। উল্টো জমির মালিকদের বিরুদ্ধে মামলা করাসহ বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ জমির মালিকদের।

সাতক্ষীরা সদরের বাঁশদহা ইউনিয়নের ভবানীপুর ব্রীজ এলাকার জমির মালিক মোশারফ হোসেন বলেন, ভবানীপুর মৌজার জে. এল নং-৫ এর আওতায় মজুমদার খালসহ দুই পাড়ে আমাদের ব্যক্তিগত রেকর্ডীয় মালিকানাধীন জমি রয়েছে। অথচ এই জমি অধিগ্রহণ না করে মজুমদার খাল খননের জন্য সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর হতে সাত-১-২৭ নং প্যাকেজের আওতায় ৫ কোটি ৮৭ লাখ ৪৪ হাজার ৪৩৯ টাকা ব্যয়ে সাতক্ষীরার মজুমদার খালের ১৬.৯৮০ কি.মি খননের জন্য টেন্ডার (টেন্ডার আইডি: ৯৭৯০৩২) আহবান করা হলে কাজ পান ইউনুস এন্ড ব্রাদার্স নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।

কার্যাদেশ পাওয়ার পর ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে খাল খননের কাজ শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমরা জমির মালিক হলেও আমাদের এ বিষয়ে কোন নোটিশ দেয়া হয়নি। সরকারি নিয়মনীতি না মেনে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সালাউদ্দীন নিয়মনীতি না মেনে খাল খনন শুরু করেছে। জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন দিয়েও আমরা কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না।

মোশারফ হোসেন আরও বলেন, খালের দুই পাড় দিয়ে ধান ক্ষেত, মাছের ঘের, গাছ পালা, পুকুর, এমনকি ঘরবাড়ি রয়েছে। এই কাজ অব্যাহত রাখলে আমরা জমির মালিকরা চরম ক্ষতির শিকার হব। এমতাবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে জমির সীমানা নির্ধারণ করে জমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে সরকারি নিয়ম নীতি অনুসরণ করে খাল খনন কাজ করার দাবি জানিয়ে তিনি জানান, তাদেরকে এখন মামলা দেয়ার হুমকি-ধামকি দেয়া হচ্ছে।

থানাঘাটা এলাকার কাজী আবু তাহের বলেন, আমরা দীর্ঘদিন যাবত পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত মজুমদার খাল ও খালের দুই ধারের জমির খাজনা পরিশোধ করছি। কিন্তু আমাদেরকে না জানিয়ে ঠিকাদার খাল খননের কাজ শুরু করেছেন। আমরা জমির মালিকগণ ঠিকাদারের প্রতিনিধির কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, টেন্ডারের মাধ্যমে আমরা কাজ পেয়েছি। কার্যাদেশ অনুযায়ী পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ -১ এর নির্বাহী প্রকৌশলীর নির্দেশে আমরা কাজ করছি। জমি অধিগ্রহণের বিষয়ে আমরা জানি না।

এ বিষয়ে ঠিকাদারের প্রতিনিধি মাজহারুল ইসলাম বলেন, খালের অনেক জায়গায় ব্যক্তিগত জমি থাকায় জমির মালিকগণ দাবি করেছে। এ বিষয়টি আমাদের কিছু করার নেই। কাজ বন্ধ হলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবো।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সালাউদ্দীন বলেন, যে কোনো স্থানে খাল খনন করতে গেলে কিছু না কিছু সমস্যা হবেই। এসব দেখতে গেলে কোনো খাল কাটা সম্ভব হবে না। আমরা জমির মালিকদের দাবি অনুযায়ী কোথাও চওড়া কোথাও চিকন করে খাল কেটে যাবো। যাতে তাদের ক্ষতি না হয়।

তিনি বলেন, খালের জমি অনেকে বন্দোবস্ত নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভোগ দখল করছেন। এখন ম্যাপ অনুযায়ী খাল খনন করা হবে। এছাড়া আমাদের এখন কিছু করার নেই। খাল খনন হলে এলাকাবাসীর লাভ হবে, জলাবদ্ধতা কমে যাবে বলে মত তার।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!