খুলনা, বাংলাদেশ | ২৫ পৌষ, ১৪৩১ | ৯ জানুয়ারি, ২০২৫

Breaking News

  রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদা ক্রম ঠিক করতে আপিল বিভাগে আবেদন, শুনানি ১৬ জানুয়ারি
  ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে মোটরসাইকেলের ধাক্কা, নিহত ২
  মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা আজহারের রিভিউ শুনানি ২৩ জানুয়ারি
  যাত্রীবাহী বাসের অ্যাম্বুলেন্সের সংঘর্ষে দুটোতেই আগুন, পুড়ে নিহত ৪

সস্তায় গরুর মাংস এলো না ব্রাজিল থেকে, কারণ জানালেন রাষ্ট্রদূত

গেজেট ডেস্ক 

বাংলাদেশে অনেক সস্তায় গরুর মাংস রফতানির প্রস্তাব দিয়েছিল ব্রাজিল। কিন্তু সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও প্রয়োজনীয় সনদ (সার্টিফিকেশন) না পাওয়ার কারণে ব্রাজিল আর শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশে গরুর মাংস রফতানি করতে পারেনি বলে জানিয়েছেন ঢাকায় দেশটির রাষ্ট্রদূত পাওলো ফার্নান্দো দিয়াস ফেরেস।

বুধবার (৮ জানুয়ারি) রাজধানীর বারিধারায় অবস্থিত একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত। আগামী ১৫ থেকে ১৮ জুন ব্রাজিলের সাও পাওলো শহরে অনুষ্ঠিতব্য ‘মেড ইন বাংলাদেশ এক্সপো ২০২৫’ উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ব্রাজিল বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিবিসিসিআই)।

বেশ কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশে গরুর মাংস রফতানিতে আগ্রহ দেখিয়ে আসছিল ব্রাজিল। সর্বশেষ গত এপ্রিলে লাতিন আমেরিকার দেশটি প্রতি কেজি গরুর মাংস সাড়ে চার মার্কিন ডলারে (তখনকার বিনিময় হারে ৪৯৫ টাকা) বাংলাদেশে রফতানি করতে প্রস্তাব দিয়েছিল। ওই মাসে ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাউরো ভিয়েরা দুই দিনের সফরে ঢাকায় এলে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা জানিয়েছিল কূটনীতিক সূত্রগুলো।

ব্রাজিল যখন বাংলাদেশে গরুর মাংস রফতানির প্রস্তাব দেয়, তখন ঢাকার বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস কমবেশি ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। রাজধানীর বাজারে এখন গরুর মাংস প্রতি কেজি ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত পাওলো ফার্নান্দো দিয়াস ফেরেস জানান, ব্রাজিল বিশ্বের সব চেয়ে বড় গরু ও পোলট্রি মাংস উৎপাদনকারী দেশ। বিশ্বের অনেক মুসলিমপ্রধান দেশেই ব্রাজিল থেকে গরুর মাংস আমদানির অনুমতি রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে এই অনুমতি নেই। ওই অনুমতি পাওয়ার জন্যই ব্রাজিল চেষ্টা করছিল বলে রাষ্ট্রদূত জানান।

সনদ বা সার্টিফিকেশন পাওয়ার জন্য তিনি কীভাবে দৌড়ঝাঁপ করেছিলেন, এ সম্পর্কেও কথা বলেন পাওলো ফার্নান্দো দিয়াস ফেরেস। তিনি জানান, তিনি প্রথমে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে গিয়েছিলেন এ বিষয়ে আলোচনা করার জন্য। সেখান থেকে তাঁকে বলা হয়েছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে যেতে। এরপর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে যান ব্রাজিলের প্রতিনিধিরা।

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘(তৎকালীন) মন্ত্রীর কাছে যাওয়ার পর মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বাংলায় লেখা কাগজপত্র দেখিয়ে নানা ধরনের নীতিমালার কথা জানান। তবে আমি এত নীতিমালা বুঝিনি। এককথায় যেটা বুঝেছি তা হলো, তারা অনুমতি দেননি। তবে বিষয়টি এখনো প্রক্রিয়াধীন। আশা করছি শেষ পর্যন্ত অনুমতি পাওয়া যাবে।’

শুধু দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য নয়, ব্রাজিল বাংলাদেশে নতুন বিনিয়োগ করতে চায় বলেও জানান পাওলো ফার্নান্দো দিয়াস ফেরেস। কৃষি, ওষুধশিল্প, নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ নানা খাতে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ব্রাজিল ও বাংলাদেশ পরস্পরের সঙ্গে কাজ করতে পারে বলে জানান তিনি।

ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত বলেন, কৃষি-বাণিজ্যে তাঁর দেশের অবস্থান অনেকটা পাওয়ার হাউস বা শক্তিকেন্দ্রের মতো। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশে ব্রাজিল থেকে অভিজ্ঞতা নিতে পারে। তিনি জানান, ব্রাজিলের মানুষেরা বছরে মাথাপিছু ১০০ কেজি গরুর মাংস খায়। বাংলাদেশে এ হার অনেক কম। ব্রাজিলে একটি গরুর থেকে দিনে গড়ে ৪৫ কেজি দুধ পাওয়া যায়; বাংলাদেশে পাওয়া যায় সাত-আট কেজির মতো।

পাওলো ফার্নান্দো দিয়াস ফেরেস বলেন, ‘সুতরাং শুধু মাংস রপ্তানি নয়, প্রযুক্তি স্থানান্তরের মাধ্যমেও বাংলাদেশে স্থানীয়ভাবে উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করতে পারে ব্রাজিল। তবে এ ক্ষেত্রে বেসরকারি খাতকেও এগিয়ে আসতে হবে।’

রাষ্ট্রদূত বলেন, ব্রাজিলে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষার কর্মসূচি রয়েছে। এ জন্য ব্রাজিল সরকার প্রচুর পরিমাণে ওষুধ কিনে থাকে। বাংলাদেশের ওষুধ কোম্পানিগুলো এ সুযোগ নিতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রেও সনদ বা সার্টিফিকেশনের জটিলতা রয়েছে।

খুলনা গেজেট/এএজে




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!