দ্বিতীয় দফায় আলুর দাম নির্ধারণের সপ্তাহ পার হলেও কথা রাখেনি ব্যবসায়ীরা। সরকারের নির্ধারিত দাম কেবল কাগজে কলমেই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে আলু। গেল সপ্তাহের শেষের দিকে সরকার ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)’র ট্রাক সেলের মাধ্যমে খোলা বাজারে ২৫ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রির সিদ্ধান্ত নিলেও খুলনায় তা এখনো শুরু হয়নি। ফলে উচ্চমূল্যেই আলু কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের ।
খুচরা বাজারে আলু কেজি প্রতি ৫০-৫৫ টাকায় বিক্রি হওয়ার প্রেক্ষাপটে সরকার তিনস্তরে আলুর মূল্য নির্ধারণ করে দেয়। এসময় খুচরা বাজারে আলুর দাম কেজি প্রতি ৩০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও ব্যবসায়ীরা তা না মেনে পূর্বের দামেই আলু বিক্রি করে। এমতাবস্থায় কেজি প্রতি ৫ টাকা বাড়িয়ে ৩৫ টাকা নির্ধারণ করে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। সেই নির্দেশনার এক সপ্তাহ পার হলেও নতুন দামে আলু বিক্রি করেনি ব্যবসায়ীরা।
খুলনা মহানগরীর বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা বাজারে দেখা গেছে, খুচরায় প্রতি কেজি আলু ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা বিক্রি হওয়ার কথা ৩৫ টাকা দরে। পাইকারি বাজারে কেজি প্রতি আলু ৩৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে অথচ সরকার নির্ধারিত দাম ৩০ টাকা।
খুচরা ব্যবসায়ী আমিরুল ইসলাম বলেন, সরকারের ঠিক করে দেয়া দামে তো আমরা কিনতে পারছিনা, তাহলে কিভাবে বিক্রি করবো।
পাইকারি ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা সরকার নির্ধারিত দামে আলু কিনতে পারছেন না, তাহলে বিক্রি করবে কিভাবে। আবার দাম বেশি হওয়ায় বেপারীরা আলু সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেন।
ক্রেতারা বলছেন ভিন্ন কথা। তারা বলেন, এভাবে চলতে পারে না। একটা স্বাধীন দেশে বসবাস করেও জনগণ এভাবে অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি থাকতে পারে না। এমতাবস্থায় তাদের প্রশ্ন, ব্যবসায়ীরা কি তাহলে সরকারের চেয়েও ক্ষমতাসম্পন্ন! তাদের অভিযোগ, ব্যবসায়ীদের পছন্দমত দ্বিতীয় দফায় আলুর দাম ঠিক করে দেয়া হলেও তারা মানছেন না। তারা এ ব্যাপারে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলেন।
ক্রেতারা আরো বলেন, যখন কোন জিনিসের দাম বাড়ে তখন সাধারণ মানুষ টিসিবির পণ্য কেনার আশায় থাকেন। খুলনায় তাও এখনো শুরু হয়নি। তারা অবিলম্বে টিসিবির মাধ্যমে আলু বিক্রির দাবি জানান। অন্যথায় মানুষের জীবন জীবিকা কঠিন হয়ে পড়বে।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি)’র খুলনা অফিসে যোগাযোগ করা হলে জানা যায়, ঢাকায় টিসিবির মাধ্যমে আলু বিক্রি শুরু হলেও খুলনায় তা এখনো শুরু হয়নি। কবে নাগাদ শুরু হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনো আমরা এ ব্যাপারে কোন নির্দেশনা পাইনি।
এদিকে গত ১৮ অক্টোবর বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী কোল্ড স্টোরেজের মালিকদের সাথে এক বৈঠকের পর তিন দিনের মধ্যে খোলাবাজারে ২৫ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। একই সাথে সরকার নির্ধারিত দামে বাজারে আলু বিক্রি কঠোরভাবে মনিটরিং করা হবে বলে জানানো হয়।
খুলনা গেজেট/এনএম