যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেছেন, যশোরের ঐতিহ্যবাহী খেঁজুর গাছের রস-গুড়ের সুনাম দেশে সমাদৃত। আমরা এই ব্রান্ডকে সংরক্ষণ করতে চাই। যশোরের মধ্যে প্রথমে আমরা চৌগাছায় খেঁজুর গাছ রোপন ও রক্ষানাবেক্ষণ করতে চাই। বিশেষ পরিকল্পনার মাধ্যমে এই ঐতিহ্য আমাদের ধরে রাখতে হবে। এ জন্য সরকারি সহযোগিতা ও প্রনোদনা আমরা নিশ্চিত করব। এ ক্ষেত্রে খেঁজুর গাছ, গুড় উদপাদনের সাথে যুক্ত গাছি ও সকল জনসাধারণের আন্তরিক সহযোগিতা একান্ত দরকার।
তিনি বলেন দু’দিন ব্যাপি খেঁজুর গুড়ের মেলার আয়োজনটি ছিল অত্যান্ত চমৎকার। আমি মনে করি এই মেলা থেকে খেঁজুর গাছ সংরক্ষণের একটি বার্তা সকলের মধ্যে যাবে। মেলা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা পরিবেশকে সুন্দর রাখার চেষ্টা করব। পরিবেশের জন্য তাল ও খেঁজুর গাছ অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। পতিত জমি, নদের পাড় বা ফাকা এলাকায় এই গাছ রোপনের মাধ্যমে প্রকৃতির ভারসম্য রক্ষা করতে পারি। গাছ রোপন করলেই হবেনা এটা পরিচর্জা করতে হবে। তিনি বলেন খাদ্যপন্যে ভেজালের বিরুদ্ধে আমাদের শক্তভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে। ভেজালের বিরুদ্ধে সোচ্চার না হলে খেঁজুর গুড় বা পণ্যের বাজার ও বাণিজ্যিক সুযোগ আমরা হারাবো। কিন্তু সেটা আমরা হারাতে চাইনা। তিনি বলেন খেঁজুরের রস-গুড় ব্রান্ড পন্য। একই সাথে আমাদের ঐতিহ্য এবং জীবিকা। যে কারনে আমাদের সততা দরকার। যে যার অবস্থান থেকে ভূমিকা পালন করলে যশোরের ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে।
মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা চত্বরে যশোরের ঐতিহ্য ধরে রাখতে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দু’দিন ব্যাপি খেঁজুর গুড় মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথাগুলো বলেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক (ডিডিএলজি) হুসাইন মোহাম্মদ শওকত, উপজেলা চেয়ারম্যান ড. এম মোস্তানিছুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কলামিস্ট মিজানুর রহমান।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান দেওয়ান তৌহিদুর রহমান, পৌর মেয়র নূর উদ্দীন আল মামুন হিমেল, থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম সবুজ, ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেম প্রমূখ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা হবিবর রহমান, আতাউর রহমান লাল, সিরাজুল ইসলাম, শাহীনুর রহমান, মমিনুর রহমান, নূরুল কদরসহ উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান, গণমাধ্যমকর্মী ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সমাজসেবা কর্মকর্তা মেহেদী হাসান।
আলোচনা সভা শেষে প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান কুইজ, রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ও সেরা গুড় তৈরি করা গাছিদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন। অনুষ্ঠান শেষে মেলার বৈশাখী মঞ্চে মনোজ্ঞ এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।