খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ১৬ ডিসেম্বর ঘিরে কোনো ধরণের হামলার শঙ্কা নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  মহাখালীতে সড়ক-রেললাইন অবরোধ শিক্ষার্থীদের, সারা দেশের সঙ্গে ঢাকার ট্রেন চলাচল বন্ধ

শ্যামনগরে শিবির নেতাকর্মীদের মারপিট, সাবেক এমপি দোলনের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের মারপিটের সূত্র ধরে আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য এস.এম আতাউল হক দোলনের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) দুপুর ১টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত শ্যামনগর উপজেলার গুমানতলী গ্রামে এসব ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও শ্যামনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। তবে দু’পক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনায় গোটা এলাকাজুড়ে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১টার দিকে ছাত্রশিবিরের ১৫-১৬ জন নেতাকর্মী দাওয়াতী কাজের জন্য আতাউল দোলনের বাড়ির সন্নিকটস্থ গুমানতলী ফাযিল মাদ্রাসায় যায়। এখবর জানতে পেরে স্থানীয় গ্রামবাসী সংঘবদ্ধ হয়ে লোহার রড, হকিস্টিক ও লাঠিসোটা নিয়ে শিবিরের নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে গ্রামবাসীর চতুর্মুখী হামলায় ছত্রভঙ্গ হয়ে শিবিরের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে সংগঠনের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সহায়তায় গ্রামবাসীর হামলায় মারাত্মক আহত শিবিরের শ্যামনগর উপজেলার পশ্চিম শাখার সাহিত্য সম্পাদক আসাদুল্লাহ সাঈদী (১৯), মহসীন কলেজ শাখার সেক্রেটারি আল শাহরিয়ার রোকন (১৭), পৌরসভার সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ আল সিয়াম (১৬)সহ শিবির কর্মী মিরাজকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী, ভুক্তভোগী পরিবারসহ স্থানীয় সূত্র জানায়, নেতাকর্মীদের উপর হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিবিরের প্রায় তিনশ নেতাকর্মী উপজেলা সদরে জড়ো হয়। একপর্যায়ে মিছিল সহকারে তারা গুমানতলী গ্রামে যেয়ে আতাউল হক দোলন ও তার পিতা সাবেক এমপি এ.কে ফজলুল হকের বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় লাঠিসোটা ও প্লাস্টিকের পাইপ দিয়ে তারা বাড়ি দু’টিতে ব্যাপক ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি ফজলুল হকের কক্ষগুলোর জিনিসপত্র তছনছ করে।

এসময় বাইরে থেকে ছুঁড়ে মারা ইটের আঘাতে আতাউল হক দোলনের পুত্রবধূ জুলি মুখে আঘাতপ্রাপ্ত হন। সাবেক এমপি ফজলুল হক সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। ঘটনায় সময় আতাউল হক দোলন ও তার পিতা ফজলুল হক বাড়িতে ছিলেন না।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রশিবিরের সভাপতি রাশিদুল ইসলাম বলেন, সংগঠনের দাওয়াতি কাজে যাওয়ার পর বিনা উস্কানীতে আমাদের নেতৃবৃন্দের উপর হামলা করা হয়। এসময় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে থাকা যাবতীয় কাগজপত্র ছিনিয়ে নেয়ার পাশাপাশি লোহার রড ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে নেতৃবৃন্দকে মারাত্মকভাবে আহত করা হয়।

এসব বিষয়ে জানতে বার বার চেষ্টা করেও আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক এমপি আতাউল হক দোলনের সাথে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে তার ছেলে আতাহার শিহাব রাহুল জানান, তাদের গ্রামে শিবিরের নেতাকর্মীদের আসার বিষয়ে তারা কেউ অবগত ছিলেন না। বরং গ্রামবাসীর সঙ্গে শিবির নেতাকর্মীদের বাদানুবাদের জেরে হাতাহাতির সময় তার ছোট ভাই রাব্বি ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন। অথচ প্রায় দুই ঘণ্টা পর দুই/তিনশ শিবির কর্মী-সমর্থক মিছিল সহকারে তাদের বাড়িতে ঢুকে হামলা ও ভাঙচুর করেছে। এসময় তিনটি মোটর সাইকেল ও একটি ব্যক্তিগত গাড়িসহ বাড়ির আসবাবপত্র পর্যন্ত ভেঙে গুড়িয়ে দেয়া হয় বলেও তিনি জানান।

এঘটনায় শ্যামনগর থানার ওসি (তদন্ত) ফকির তাইজুর রহমান বলেন, দুপুরের আগে হামলার ঘটনায় আহত শিবির কর্মীদের উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেসময় পরিস্থিতি শান্ত থাকলেও হঠাৎ বিকেলের দিকে উত্তেজিত কিছু তরুণ আওয়ামী লীগের সাবেক এমপির বাড়িতে হামলার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে দ্রুত সেনাবাহিনীর সদস্যদের সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়। এঘটনায় কোনো পক্ষ রাত সাতে ৭টা পর্যন্ত থানায় লিখিত কোনো অভিযোগ দেয়নি বলেও জানান তিনি।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!