সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপকূল রক্ষা বাঁধ কাটার কাজে বাধা দেয়ায় উপজেলার গাবুরা ইউনিয়ন যুবলীগের শীর্ষ নেতা মোস্তাক আহমেদ কর্তৃক পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সেকশন অফিসার (এসও) সাজ্জাদুল ইসলামকে পিটিয়ে এলাকা ছাড়া করার হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (২ আগষ্ট) সকালে উপকূলীয় শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরার গাগড়ামারী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এঘটনায় ওই পাউবো কর্মকর্তা শ্যামনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করার পাশাপাশি বাঁধ কাটার ঘটনায় মোস্তাক আহমেদের বিরুদ্ধে এজাহার জমা দিয়েছেন। যুবলীগ নেতা মোস্তাক আহমেদ সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের ডুমুরিয়া গ্রামের শহর আলী গাজীর ছেলে।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকাল থেকে স্থানীয় ১০-১২ জন শ্রমিক গাবুরাকে ঘিরে থাকা গাগড়ামারী অংশের পাউবো’র উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধ কাটতে থাকেন। খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকালে ওই এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত পাউবো’র সেকশন অফিসার (এসও) সাজ্জাদুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গেলে শ্রমিকরা পালিয়ে যায়। এসময় গাবুরা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মোস্তাক আহমেদ সেখানে উপস্থিত হয়ে পানিশূন্য হয়ে পড়ায় তার চিংড়ি ঘেরে পানি উঠানোর ব্যবস্থা করতে তিনি শ্রমিক দিয়ে বেড়িবাঁধ কেটে পাইপ বসানোর কথা জানান।
এসময় বাঁধ কাটতে নিষেধ করে পরবর্তীতে একই কাজ করা হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান পাউবো’র ওই কর্মকর্তা। একপর্যায়ে গাবুরা ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি মোস্তাক উত্তেজিত হয়ে তাকে ‘পিটিয়ে এলাকা ছাড়া’ করার হুমকি দিয়ে পরবর্তীতে আর গাবুরায় পা রাখতে নিষেধ করেন। এসময় উত্তেজিত যুবলীগ নেতা তার উপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা করলে স্থানীয়দের হস্তক্ষেপে তিনি ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
ঘটনার শিকার পাউবো’র সেকশন অফিসার সাজ্জাদুল ইসলাম জানান, উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধ কাটার বিষয়ে উচ্চ আদালতসহ প্রধানমন্ত্রীর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এসব জানা সত্ত্বেও বাঁধ কেটে পাইপ বসানোর কাজে বাঁধা দেয়ায় মোস্তাক আহমেদ তাকে মারধরের হুমকি দিয়ে এলাকায় যেতে নিষেধ করেছেন। ঘটনার পরপরই তিনি শ্যামনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিসহ বাঁধ কাটার ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন বলেও জানান।
এবিষয়ে মোস্তাক আহমেদ জানান, চিংড়ি ঘেরে পানি ওঠানামার কাজে ব্যবহারের জন্য বাঁধের নিচ দিয়ে কয়েক বছর আগে থেকে একটি পাইপ ছিল। সম্প্রতি বাঁধের কাজ করার সময় ওই পাইপ ডেবে যাওয়ায় চিংড়ি ঘেরের পানি তোলার জন্য নুতন একটি পাইপ বসানোর জন্য সামান্য বাঁধ কাটায় উক্ত কর্মকর্তার সাথে বাদানুবাদ হয়েছে। এসময় উপস্থিত লোকজন উত্তেজিত হয়ে সেকশন অফিসার সাজ্জাদুলকে খারাপ ভাল কিছু কথা বলে থাকতে পারে বলেও তিনি দাবি করেন।
শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাজী ওয়াহিদ মুর্শেদ জানান, একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন পাউবোর এক কর্মকর্তা। একই সাথে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি জানান, অভিযোগের বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।
খুলনা গেজেট / আ হ আ