চারিদিকের কুয়াশায় জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। আর মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে শীত শুরু হবে পুরোদমে। এরই মধ্যে ভোরে লতা-পাতা আর ঘাসের উপর ঝরে পড়ছে শিশির বিন্দু। গ্রামের চাষিরা ছুটে যাচ্ছে ফসলের ক্ষেতে কেউ বা আবার বপন করবে হলুদের অপরুপ সৌন্দর্যের সরিষা।
এমন মৌসুমে শীত শুরুর সাথে সাথে খেজুর গাছ প্রস্তুত করতে ব্যস্ত সময় পার করছে গাছিরাও। আর শীতের মৌসুম শুরু হতে না হতেই আবহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য খেজুরের রস আহরণে ফুলতলা উপজেলার আটরা গিলাতলা ইউনিয়নের বিল ডাকাতিয়ায় ও আশপাশের গ্রামের কাঁচা পাকা মেঠো রাস্তার পাশে সারি দিয়ে লাগানো খেজুর গাছ কাটতে ব্যস্ত গাছিরা। এ সময় তারা বিশেষ কায়দায় কোমরে রশি বেঁধে খেজুর গাছের উপরে উঠে। গাছের উপরের অংশের ছাল বের করার এক সপ্তাহ পরেই আবার হালকা কেটে তাতে নল লাগানো হয়। পরে সেখান থেকে রস সংগ্রহ করা হয়। কয়েক দিনের মধ্যেই পুরোদমে রস সংগ্রহ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন গাছিরা।
স্থানীয়রা বলছেন, আর মাত্র কয়েকদিন পরই গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা হবে। রস থেকে গুড় তৈরির পর্ব শুরু হয়ে চলবে প্রায় ফাল্গুন মাস পর্যন্ত। হেমন্তের প্রথমে বাজারগুলোতে উঠতে শুরু করবে সুস্বাদু খেজুরের পাটালি ও গুড়। অবহেলায় বেড়ে ওঠা খেজুরের গাছের কদর এখন অনেক বেশি।
ফুলতলা উপজেলা উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা শেখ মনজুর আলম জানান, উপজেলায় প্রায় ৮ হাজার খেজুরগাছ রয়েছে। ১১ ঠিলা রস জ্বালিয়ে ১ ঠিলা গুড় তৈরি হয় , সে হিসাবে ৮ হাজার গাছের ভিতরে প্রায় ৬ হাজার গাছ থেকে এ বছর প্রায় আড়াই টন গুড় উৎপাদন হবে। খেজুরের রস এবং গুড় সুস্বাদু ও পুষ্টিকর একটি ঐহিত্যবাহী সুমিষ্ট খাবার। দিন দিন খেজুর গাছের সংখ্যা কমছে ফলে গাছিও তেমন নেই। কৃষকরা আগ্রহী হলে খেজুর গাছ পরিচর্যায় প্রশিক্ষণ এমনকি উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে তাদের সার্বিক সহযোগিতা করা হবে বলেও জানান তিনি।
খুলনা গেজেট/ টি আই