খুলনা, বাংলাদেশ | ৯ পৌষ, ১৪৩১ | ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে ঢাকার চিঠি গ্রহণ করেছে দিল্লি, নিশ্চিত করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী মুখপাত্র
  ২০২৫ সালে দেশের সব সরকারি-বেসরকারি নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ছুটি ৭৬ দিন, একটানা বন্ধ ২৮ দিন

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে কাঁচা বাজারের আড়ৎ, বিঘ্নিত হচ্ছে পাঠদান

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার পাটকেলঘাটায় এক প্রভাবশালী কর্তৃক সাধারণের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে অবৈধভাবে গড়ে তোলা হয়েছে কাঁচা বাজারের আড়ৎ। একই সাথে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের জায়গা দখল করে নির্মাণ করছেন বাজারে যাতায়াতের রাস্তা। ফলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নষ্টের পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে পড়েছে শিক্ষার্থীসহ পাটকেলঘাটা বাজারে আসা যাওয়া করা সাধারণ মানুষ। একই সাথে বিঘ্নিত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। বিদ্যালয়ের পাশে গড়ে তোলা কাঁচা বাজারের আড়তটি দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগিরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তালা উপজেলার ধানদিয়া ইউনিয়নের সেনেরগাতি গ্রামের ব্যবসায়ি মোঃ বাবলুর রহমান পাটকেলঘাটা হাই স্কুলের সীমানা প্রাচীর ঘেষে গড়ে তুলেছেন একটি কাঁচা বাজারের আড়ৎ। আবার সাতক্ষীরা-খুলনা মহাসড়কের ধারে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) এর অধিগ্রহণকৃত জমি ভরাট করে নির্মাণ করেছেন কাঁচা বাজারের যাতাওয়াতের রাস্তা। এছাড়া মহাসড়কের পাশে ড্রেনের স্লাবের উপর ঢালাই করা হয়েছে। যা সড়ক দুর্ঘটনার সহায়ক হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। একই সাথে পাটকেলঘাটা হাইস্কুল সড়ক থেকে দলুয়া সড়কে যাওয়ার একমাত্র চলাচলের পথটিও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের পাশ দিয়ে যাওয়া এই পথ দিয়ে স্কুলের শিক্ষার্থী সহ পাটকেলঘাটা বাজারে আসা সহস্রাধিক লোক প্রতিদিন চলাচল করে। কাঁচা বাজারের আড়তের কারণে সাধারণের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্কুলের শিক্ষার্থীসহ পথচারীদেরকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এখন মহাসড়ক ব্যবহার করতে হচ্ছে।

এদিকে হাইস্কুল সড়ক থেকে দলুয়া সড়কে যাওয়ার রাস্তাটি ভরাট করে সেখানে ছোট ছোট দোকান ঘর বাধার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে কাঁচা বাজরের সামনে ভরাট করা স্থানে সাতক্ষীরা-খুলনা মহাসড়কের গা ঘেষে অবৈধভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে ছোট ছোট একাধিক দোকন ঘর। যা পরবর্তীতে ভাড়া দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

পাটকেলঘাটা হাই স্কুলের দশম শ্রেণীর একজন শিক্ষার্থী জানান, স্কুল ছুটির পর আমরা সাতক্ষীরা-খুলনা মহাসড়কের গা ঘেষে যাওয়া রাস্তা দিয়ে পায়ে হেটে দুলায় সড়কে উঠে ভ্যানে করে বাড়িতে যেতাম। সেই রাস্তাটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন আমাদের মহাসড়ক পার হয়ে যেতে হয়। মহাসড়কটি দিয়ে সবসময় দ্রুত গতিতে গাড়ী চলাচল করায় সেটি পার হতে খুব ভয় লাগে আমাদের। অনেক সময় দৌড়ে পার হতে গিয়ে অনেকে সড়কের উপর হুমড়ি খেয়ে পড়েও যায়। শিক্ষার্থীরা ওই সড়কটি পুনরায় খুলে দেওয়ার দাবি জানায়।

বিদ্যালয়ের অপর একজন শিক্ষার্থী জানান, সকালে ক্লাস শুরুর পর অনেক সময় স্কুলের পাশের কাঁচা বাজারের লোকজনের চিৎকার চেচামেচিতে আমাদের ক্লাসে মনোসংযোগের বিঘ্ন ঘটে। বিশেষ করে সকালের দিকে ক্লাসে স্যারেরা কি পড়াচ্ছেন তা বুঝতে কষ্ট হয়।

পাটকেলঘাটা হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক শেখ আব্দুল হাই বলেন, বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর ঘেষে অবৈধভাবে গড়ে তোলা হয়েছে একটি কাঁচা বাজারের আড়ৎ। বাজার চলাকালিন সময়ে ক্রেতা বিক্রেতাদের কথোপকথনের কারণে সব সময়র হৈচৈ লেগেই থাকে। এতে করে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ দারুণভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। বাজার চলাকালিন সময়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পাঠদান ও গ্রহণে মনোসংযোগে বিঘ্নের সৃষ্টি হচ্ছে। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে স্কুলে যেতে পারছেন উল্লেখ করে তিনি এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আর্কষণ করেন।

এ বিষয় কাঁচা বাজারের আড়তের মালিক বাবলুর রহমান বলেন, আমি ওখানে মাছের আড়ৎ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু স্কুলের শিক্ষার্থীদের গ্যাস লাগতে পারে সেজন্য কাঁচা বাজারের আড়ৎ করেছি। আমি প্রাচীর দিয়ে আলাদা করে নিয়েছি।

তিনি বলেন, আমিতো আর ওখানে মাইক বাজাবো না, যে কারণে বিদ্যালয়ের কোন সমস্যা হওয়ার কথা না। তাছাড়া বাজারের সব দোকান এখনো সেভাবে চালু হয়নি। আর এই বাজার করতে কোন বাধ্যবাধকতা নেই বলে তিনি জানান।

তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মো. রাসেল বলেন, গ্রামীন হাটবাজার করার ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি লাগে। কিন্তু আমরা ওই বাজার করার জন্য কোন অনুমতি দেয়নি। অভিযোগ পেলে সহকারি কমিশনার (ভূমি) কে দিয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয় সাতক্ষীরা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আনোয়ার পারভেজ জানান, পাটকেলঘাটা সওজ এর জায়গা দখল করে বাজারের রাস্তা নির্মাণের বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। সওজ এর জায়গা দখল করে কেউ অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করতে পারবে না। পরবর্তীতে অবৈধ উচ্ছেদ অভিযানকালে রাস্তাসহ স্থাপনা গুলো উঠিয়ে দেয়া হবে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!