যশোরের অভয়নগরে শিক্ষার্থীদের সাথে তাস খেলে শিক্ষক দিবস উদযাপন করেছে পায়রাহাট ইউনাইটেড কলেজের খন্ডকালীন বাংলা শিক্ষক ও অন্বেষণ নামের একটি কোচিং সেন্টারের শিক্ষক রফিক সানি। সে পায়রা গ্রামের লুৎফার রহমানের ছেলে।
ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার ( ৫ অক্টোবর) দুপুরে পায়রা বাজার সংলগ্ন অন্বেষণ কোচিং সেন্টারের মধ্যে অবস্থিত ঐ শিক্ষকের বেডরুমে। ২ জন মেয়ে শিক্ষার্থী ও একজন ছেলে শিক্ষার্থীদের নিয়ে তাস খেলছেন। এ বিষয়টি তাদের নিজেদের মুখ ঢেকে ছবি তুলে সেই ছবি ফেসবুকে আপলোডও করেছেন ঐ শিক্ষক নিজেই। ক্যাপশনে লিখেছেন, শিক্ষক দিবসের বড় উপহার তোদের আগমন। তোরা না আসলে সত্যিই দিনটি হতাশায় ডুবে যেত। ভালোবাসা নিস প্রাণের টুকরাগুলো। এই কথা গুলো লিখে তিনি তার ফেসবুকে আপলোড করেছেন।
তবে এ ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন সচেতন মহল। নাজির নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন পেশার সাথে এই মোনাজাত, তাও আবার ফেসবুকে আপলোড; চরম ধৃষ্টতা ও নিন্দনীয়।
ইমন হোসেন নামে একজন লিখেছেন, আজ কেন ছাত্রী শিক্ষক এর হাতে ধর্ষণ হচ্ছে? আজ কেন প্রতিটা বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের প্রাইভেট বন্ধ হচ্ছে? তার একটাই কারণ কিছু কিছু শিক্ষকের কারনে হাজারও শিক্ষাগুরু কে হতে হচ্ছে অপমান। শিক্ষক যদি ছাত্রকে কলমের বদলে তাস তুলে দেয় সে শিক্ষক হতে পারে না।
মিকাইল নামে একজন লিখেছেন, ভদ্রতা ভার্সিটিতে শিক্ষা দেওয়া হয় না, ভদ্রতা শিক্ষা দেয় পরিবার।
মিঠু মোল্যা নামের অপর একজন লিখেছেন, শিক্ষকের কাছ থেকে এজাতীয় কর্মকান্ড আশা করা যায়না। অনেকে অবক্ষয়ের যুগে নিত্য নতুন অসামাজিক কার্যকলাপ ও অপসংস্কৃতি চর্চার তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি।
এ ঘটনায় চাঁপা ক্ষোভ বিরাজ করছে অভিভাবক মহলে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পায়রাবাজার নূরানী মাদ্রাসা সংলগ্ন এলাকায় ৪টি রুম নিয়ে এ কোচিং সেন্টারের অবস্থান। ৩টি কক্ষে পাঠদান হলেও ১টি কক্ষে থাকেন ঐ শিক্ষক। এর আগেও বিভিন্ন নেতিবাচক কর্মকান্ডের কারণে সমালোচনার মুখে পড়েন এই তথাকথিত বাংলা শিক্ষক। সম্প্রতি অবাধ যৌনচারের ইঙ্গিত বহনকারী কয়েকটি পোস্ট শেয়ার করে সমালোচনার জন্ম দেয়। এলাকাবাসীর অভিমত দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতার আড়ালে সে শিক্ষার্থীদেরকে বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকান্ডে উৎসাহ দিয়ে আসছে। তাছাড়া তার বিকৃত চিন্তা চেতনা ছড়িয়ে দিচ্ছে কোমলমতী শিক্ষার্থীদের মাঝে। তার এমন কর্মকান্ড বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
এমন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কি বার্তা দিচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে রফিক সানি বলেন, আমি ছবি আপলোড দিয়ে কোন অন্যায় করিনি। এরা সবাই আমার সাবেক শিক্ষার্থী।
এ ব্যাপারে রফিক সানির সহযোগী শিক্ষক আল আমিন মোল্যার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমারও পছন্দ হয়নি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সামাজিক অবক্ষয়ের বাকি আছে কি?
৩নং চলিশিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সানা আব্দুল মান্নান জানান, তার এহেন কার্যক্রম গ্রহণযোগ্য নয়, এগুলো আমাদের সমাজ সমর্থন করেনা।
পায়রা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান বিশ্বাস জানান, আমি বিষয়টি শুনেছি, এধরণের কাজ সে আগেও করেছে। এগুলো মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়।
এব্যাপারে জানতে চাইলে পায়রাহাট ইউনাইটেড কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম ইকবাল কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
খুলনা গেজেট/ টি আই