খুলনা, বাংলাদেশ | ২৫ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১০ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  দেশে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১০৩৩
  কুষ্টিয়ায় বজ্রপাতে ৪ জনের মৃত্যু
  আরও এক মামলায় খালাস পেলেন ফখরুল-রিজভী-আমির খসরু
  ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে রেণু হত্যা : একজনের মৃত্যুদণ্ড, ৪ জনের যাবজ্জীবন

শান্তিনগরে উপহারের ঘরের দুয়ারে অশান্তির কালো ছায়া

কাজী মোতাহার রহমান

মুজিববর্ষে শান্তিনগরে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ১৪ শতাংশ ঘর তালিকা বহির্ভূতরা দখল করেছে। এ নিয়ে সেখানে দু’পক্ষের সৃষ্টি হয়েছে। বসতিদের দুয়ারে অশান্তির কালোছায়া নেমে এসেছে। দখলদাররা শাসকদলের সমর্থক। শান্তিনগর খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার রংপুর ইউনিয়নের একটি আশ্রয়ণ প্রকল্প। গৃহহীনদের জন্য এখানে ৭৬টি ঘর নির্মাণ হয়, প্রথম ধাপে।

প্রকল্পের বাসিন্দা খলিলুর রহমান সরদার ভাষ্য, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বছরের ২১ জানুয়ারি ২শতক জমি বরাদ্দ করে তার নামে দলিল করে দেওয়া হয়। সেই সূত্রে তিনি ৫৭ নম্বর ঘরের মালিক। তার নামে বরাদ্দকৃত ঘরটি খলিলুর রহমান তালুকদার নামে এক ব্যাক্তি দখল করেছে। এ নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই ঝগড়া বিবাদ হচ্ছে। স্থানীয়দের আরো অভিযোগ ৯ নম্বর ঘর সাথি বেগম, ১১ নং ঘর মুর্শিদা বেগম, ১২ নং ঘর রুপা বেগম, ১৫ নম্বর ঘর আনোয়ারা বেগম, ২৭ নং ঘর বিলকিস পারভীন, ২৯ নং ঘর পারভীন বেগম, ৩৪ নং ঘর আমিরুল গাজী, ৩৬ নং ঘর শরিফা বেগম, ৪৭ নং ঘর পূজা দাস, ৫৬ নং ঘর মেহেরুন্নেসা, ৫৫ নং ঘর তপতী, ৫৮ নং ঘর কবির গাজী, ৬০ নং ঘর খাদিজা, ৭৩ নং ঘর রহিমা খাতুন এবং বাকি তিনটি ঘর বাবলু তালুকদার, আমিনুর রহমান ও মনোয়ারা খাতুন অবৈধভাবে দখল করে আছে। দখলদারদের মধ্য থেকে বলা হয়েছে তারা সরকারি দলের সমর্থক।

প্রকল্পের বাসিন্দাদের অভিযোগ, আমভিটার আহাদ গাজী পাঁচ বিঘা জমির মালিক হওয়া সত্ত্বেও ভূমিহীন হিসেবে ঘর পেয়েছে। আহাদ গাজী এঘরটি তার মেয়ে ও জামাইকে উপহার দেবে।

এ প্রকল্পের ৫৯ ঘরের মালিক দুই শতক করে জমি পেয়েছে। বাকিরা এখনো দলিল পায়নি। অধিকাংশ ঘর দিনরাত তালাবদ্ধ। বরাদ্দ পাওয়াদের মধ্যে অনেকেরই থুকড়া, শান্তিনগর, আমভিটা, শাহপুরে বাড়িঘর আছে। ৬ মাসের মধ্যে অভ্যন্তরীণ রাস্তার ইটগুলো এবড়োখেবড়ো হয়ে পড়েছে। এক ঘন্টা বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

২৩ নং ঘরের মালিক নগেন্দ্রনাথ সরকারের স্ত্রী সুনিতা সরকারর অভিযোগ, প্রকল্প এলাকায় টিউবওয়েল নেই। আধা মাইল দূরে প্রাইমারি স্কুলের সামনে খাবার জল সংগ্রহ করতে হয়। একই অভিযোগ ৩ নং ঘরের মালিক আবুল হাসেম হাওলাদারর স্ত্রী সুলেমা খাতুনের। করোনাকালীন সময়ে তার পরিবার ঋণী হয়ে পড়েছে। প্রকল্পের বাসিন্দা অনেকেই জ্বর ও কাশিতে ভুগছেন।

উপজেলার রংপুর ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর মৌজার শান্তিনগরে এক একর ৫২ শতক জমির উপর উপহারের ৭৬ টি ঘর স্থাপন করা হয়েছে। প্রত্যেক ঘরের নির্মাণ ব্যয় ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। গত সপ্তাহে বিদ্যুতের বাতি জ্বলায় অন্ধকার দূর হয়েছে।

প্রকল্প কমিটির পক্ষ থেকে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ আশরাফ হোসেন বলেছেন, তালিকা বহির্ভূত কেউই উপহারের ঘরে থাকতে পারবে না। অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হবে। খুব শীঘ্রই অভ্যন্তরীণ রাস্তার সংস্কারের কাজ এবং ড্রেনেজ ব্যাবস্থার কাজ শুরু করা হবে। পানির সংকট নিরসনে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

রংপুর ইউ পি চেয়ারম্যান রামপ্রসাদ জোয়ার্দার এ বিষয়ে বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের অবৈধ দখলদারদের সম্পর্কে কোন তথ্য জানা নেই।

উপহারের ঘর পাওয়া আমভিটার আহাদ গাজীর সম্পদ সম্পর্কে তার কোনো ধারণা নেই। আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির মধ্যে ইউপি চেয়ারম্যান একজন।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!