নড়াইলের লোহাগড়ায় রিক্তা মনি(২০) নামে এক গৃহবধূকে হাত-পা বেঁধে বেধড়ক মারধোর ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে তার স্বামী নূর নবী শেখ ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী গৃহবধূর মা বাদী হয়ে ৩ জনের নাম উল্লেখ করে লোহাগড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের শেখপাড়া বাতাসী গ্রামের এরশাদ শেখের মেয়ে।
বুধবার (১৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেন লোহাগড়া থানা পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. ছদরুল।
অভিযুক্তরা হলেন, গৃহবধূর স্বামী নুরনবী শেখ, তার বাবা নুর মিয়া শেখ ও নুর মিয়া শেখের স্ত্রী নুপুর বেগম।
গত সোমবার (১৫ জানুয়ারি) বিকেলে লোহাগড়া উপজেলার লাহুড়িয়া ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর পরেরদিন মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) ভুক্তভোগী গৃহবধূর বাবা-মা খবর পেয়ে লোহাগড়া থানা পুলিশের সহোযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ জানান, গত এক বছর আগে উপজেলার লাহুড়িয়া ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের নুর মিয়া শেখের ছেলে নুর নবীর সাথে বিয়ে হয়। গত ৩ মাস আগে জানতে পারি আমি সন্তান সম্ভাবা। বিবাহের পর থেকে আমার স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন বিভিন্ন সময় আমাকে যৌতুকের দাবিতে শারীরিক নির্যাতন করে আসছে। পরে গত সোমবার বিকেল থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত যৌতুকের দাবিতে হাত পা-বেঁধে বেধড়ক মারধর করে আমার স্বামী ও তার পরিবার। পরে আমার বাবা-মা জানতে পেরে লোহাগড়া থানা পুলিশের সহোযোগিতায় আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
ভুক্তভোগী গৃহবধূর মা ঝুমুর বেগম জানান, বিয়ের পর থেকে আমার মেয়েকে বিভিন্ন সময় যৌতুকের দাবিতে মারধোর করে আমার জামাই নুর নবী তার বাবা নুর মিয়া ও তার মা নুপুর। সোমবারও একই ভাবে আমার মেয়েকে বেধে রেখে মারধর করে পরে মঙ্গলবার খবর পেয়ে পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে আমার মেয়েকে উদ্ধার করে লোহাগাড়া হাসপাতালে ভর্তি করি। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত নুরনবী শেখ মারধরের কথা স্বীকার করলেও বেঁধে রেখে নির্যাতন ও যৌতুক দাবির কথা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমার স্ত্রীর অন্য ছেলের সাথে অবৈধ সম্পর্ক আছে। তার গর্ভে যে সন্তান আছে তা আমার না।
অভিযুক্ত শাশুড়ি নুপুর বেগম মারধরের কথা স্বীকার করলেও বেধে রেখে নির্যাতন ও যৌতুক দাবির কথা অস্বীকার করেন।
লোহাগড়া থানা পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) ছদরুল বলেন, খবর পেয়ে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি।
এ ব্যপারে লোহাগড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এ ঘটনায় যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
খুলনা গেজেট/ টিএ