মধ্য আশ্বিনের এমন বৃষ্টি বিগত কয়েক বছরের মধ্যে এলাকাবাসী দেখে নাই। নড়াইলের লোহাগড়ায় দু’দিনের ভারী বর্ষণে শহরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে শহরবাসী পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। অথচ জনদুর্ভোগ নিরসনে নেই কোন উদ্যোগ বা পরিকল্পনা। জলাবদ্ধতা নিরসনে পৌরবাসীর ক্ষোভের অন্ত নেই।
বুধবার রাত থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে লোহাগড়া শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় টানা নিম্ন এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এতে শহরের অধিকাংশ এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন এলাকার রাস্তায় কাদাপানি জমে গেছে। পানি নি:স্কাশনের কোন ব্যবস্হা না থাকায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ। দোকানপাটে পানি ঢুকে পড়ায় বন্ধ হয়ে পড়েছে ব্যবসা বাণিজ্য।
শুক্রবার সকালে শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, লক্ষ্মীপাশা, লোহাগড়া বাজার, গোপীনাথপুর, খলিশাখালী, মদিনাপাড়া, পোদ্দারপাড়া, সরকারপাড়া, জয়পুর, কুন্দশী, কচুবাড়িয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টির পানি জমে রয়েছে। ফলে মানুষের ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। অনেক বাসা-বাড়িতে পানি ঢুকে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
পৌরবাসীর অভিযোগ, পানিনিষ্কাশনের সুব্যবস্থা না থাকায় একটু বৃষ্টি হলেই শহরে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। বছরের পর বছর পৌরবাসী জলাবদ্ধতার সাথে যুদ্ধ করে আসলেও সমস্যা সমাধানে উদাসীন পৌর কর্তৃপক্ষ।
লোহাগড়া বাজারের ব্যবসায়ী গণেশ রায় বলেন, ‘এলাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে ব্যবসায়ীসহ এলাকাবাসীকে সীমাহীন দূর্ভোগে পড়তে হয়। অথচ পৌর কর্তৃপক্ষ এই দুর্ভোগ নিরসনে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না।’
জলাবদ্ধতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে পৌর বাসিন্দা কাজী জিয়াউর রহমান লোটাস, হাসান খাঁন, বুলবুল খাঁন, নুরানি বেগম বলেন, ‘শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভালো না। এছাড়া পৌর এলাকার পুকুরগুলো ভরাট করে ফেলা হয়েছে। যে কারণে অল্প বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা দেখা দেয় শহরে।’
মদিনা পাড়ার মাংস ব্যবসায়ী হুরাই বলেন, ‘শহরে জলাবদ্ধতা সমস্যা নিরসনে জনপ্রতিনিধিরা আন্তরিক নয়। ফলে জনদুর্ভোগ ফি বছর লেগেই আছে’।
লোহাগড়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম হায়াতুজ্জামান বলেন, লোহাগড়া উপজেলার একমাত্র স্টেডিয়াম শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম (মোল্লার মাঠ) দুই দিনের প্রবল বর্ষণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় ছেলেমেয়েরা খেলাধুলা প্র্যাকটিস করতে পারছেন না। এ ছাড়াও পৌর এলাকায় যেসব খেলার মাঠ রয়েছে সব মাঠ গুলো পানিতে ডুবে গেছে। এতে করে ছেলে মেয়েেদের খেলাধুলা প্র্যাকটিসে সমস্যা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে লোহাগড়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র রাজিয়া সুলতানা বিউটি বলেন, গ শ্রেণীর পৌরসভা হওয়ায় প্রয়োজনের তুলনায় বরাদ্দ অপ্রতুল। তারপরও শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা সাধ্যমত কাজ করছি।
খুলনা গেজেট/এনএম