খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সাবেক আইজিপি মামুনের ফের ৩ দিনের রিমান্ড
  অ্যান্টিগা টেস্ট: তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশ ২৬৯/৯, পিছিয়ে ১৮১ রানে

লকডাউন শিথিলে আগের চেহারায় ফিরেছে সাতক্ষীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

আসন্ন কোরবানির ঈদ উপলক্ষে কঠোর লকডাউন শিথিল করায় আগের চেহারায় ফিরেছে সাতক্ষীরা। বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) থেকে সারাদেশে যানবাহন ও দোকানপাট-শপিংমল খোলার অনুমতি দিয়েছে সরকার। আগামী ২২ জুলাই পর্যন্ত কোনো ধরনের বিধিনিষেধ ছাড়াই যানবাহন ও দোকানপাট চলবে। সরকারের এমন ঘোষণায় সাতক্ষীরা শহরে সকাল থেকে জনতার ঢল নামে। বেশ কয়েকদিন ধরে অবাধ চলাচলে বিধিনিষেধ থাকায় সুযোগ পেয়ে মানুষ যেন হুমড়ি খেয়ে পড়ে শহরের রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার, দোকান পাট ও শপিংমল গুলোতে।

করোনা সংক্রমণ কমাতে কয়েকধাপে কঠোর লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হয় যা বুধবার পর্যন্ত বলবত ছিল। কিন্তু ঈদের কারণে কঠোর লকডাউনের মেয়াদ না বাড়িয়ে ১৫ জুলাই থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত শিথিল করা হয়। তবে কঠোর বিধিনিষেধে মানুষের মধ্যে মাস্ক পরার প্রবনতা কিছুটা বাড়লেও অনেকেই মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখেই চলাচল করছে সবাই। অনেকে আবার মাস্ক ব্যবহার করলেও নাক ও মুখ বের করে নিচে নামিয়ে রাখছেন। ফলে করোনা সংক্রমনের শংকা কিন্তু থেকেই যাচ্ছে সাধারণের মধ্যে।

এদিকে কঠোর লকডাউন শিথিল হওয়ায় মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে কর্ম চঞ্চলতা। গণপরিবহন চলাচল করায় শ্রমিকদের মধ্যে বিরাজ করে ঈদানন্দ। সাধারণ ব্যবসায়ীরাও দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলেছে স্বাচ্ছন্দে। বৃহস্পতিবার সকাল হতেই মুহূর্তে বদলে যায় চিরচেনা শহরের রূপ। জনতার কোলাহলে যেন হঠাৎ জেগে ওঠে শহর।

শহরের টাউনবাজার এলাকার মনিরুল ইসলাম মনি বলেন, সরকারিভাবে লকডাউন শিথিল করায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকে হাঠৎ করে যেন শহরের মানুষের ঢল নামে। শহরের মোড়ে মোড়ে ট্রাফিক জ্যাম। রিক্সা, ভ্যান, ইঞ্জিনভ্যান, ইজিবাইক ও মহেন্দ্রের ভীড়ে পুরো শহর জুড়ে সৃষ্টি হয় যানজটের। মনে হচ্ছিল শহরের সব মানুষ যেন হঠাৎ করে একসাথে রাস্তায় নেমে এসেছে। নিউমার্কেট মোড় থেকে পৌর দিঘী পর্যন্ত মটর সাইকেলে যেতে তার প্রায় আধা ঘন্টারও বেশী সময় লগেছে। যানজট ঠেকাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশের। প্রায় দিনভর শহরে এই অবস্থা চলে বলে জানান তিনি।

শহরের রাজারবাগান এলাকার আসাদুজ্জামান মধু জানান, বৃহস্পতিবার বেলা বাড়ার সাথে সাথে শহরের দোকান পাট ও শপিংমল গুলোতে ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে থাকে। বিশষে করে শহরের পাকাপুলের মোড় থেকে সুলতানপুর বড়বাজার সড়কের ফুটপথের দোকান গুলোতে ছিল ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। তবে এসব দোকান গুলোতে নারী ক্রেতাদের উপস্থিতি ছিল সবচেয়ে বেশী। এসময় স্বাস্থ্যবিধি দারুনভাবে উপেক্ষিত হয়েছে।

এদিকে দির্ঘদিন পর বাসের স্টিয়ারিং ধরতে পেরে মহাখুশি ড্রাইভার সিরাজুল ইসলাম, তরিকুল ইসলাম, গোলাম সরোয়ার, আনোয়ার হোসেন, মিজানুর রহমানসহ অনেকেই। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে তারা বাস চালাতে চান। দির্ঘদিন লকডাউনের কারণে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় শ্রমিকরা মানবেতর জীবন-যাপন করে আসছিলেন বলে জানান।

একই কথা বলেন ব্যবসায়ীরাও। তারা বলেন, লকডাউন চলাকালী ক্ষুদ্র পরিসরে যা কেনা-বেচা হতো তা দিয়ে সংসার নির্বাহ করাই কঠিন ছিল। পুঁজি বসে গেছে সংসারের পেছনে। এখন অনেক ব্যবসায়ী পুঁজি সংকটে রয়েছেন। তারা সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।

অপরদিকে ঈদের পর ২৩ জুলাই থেকে ফের সারাদেশে কঠোর লকডাউন শুরু হবে। এতে আগের মতোই গণপরিবহন ও দোকানপাট বন্ধ থাকবে।

পরিবহন ও শপিংমল ব্যবসায়ীরা বলছেন, পরিবহন ও শপিংমল-দোকানপাটে বিপুল সংখ্যক শ্রমিক কাজে নিয়োজিত। ঈদের আগ মুহূর্তে কয়েকদিন যানবাহন ও দোকানপাট খোলার অনুমতি দেওয়ায় কিছুটা স্বস্তি ফিরছে পরিবহন শ্রমিকদেও মধ্যে। শপিংমল ও পরিবহনখাতে ব্যবসার প্রধান সময় ঈদের আগে ও পরে। এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন শিথিল হওয়ায় কর্মহীনরা কিছু উপার্জন করতে পারবেন।

এদিকে পরিবহন চলাচলের অনুমতি দিলেও করোনা সংক্রমণ কমাতে বেশ কয়েকটি শর্ত দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। একইসঙ্গে ঈদ পরবর্তী ১৪ দিন গণপরিবহণসহ সব ধরনের যানবাহন বন্ধেরও নির্দেশনা দিয়েছে সংস্থাটি।
বিধিনিষেধ শিথিলের পর গণপরিবহন চলাচলের ক্ষেত্রে ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী পরিবহন করার শর্ত দিয়েছে সরকার। এক্ষেত্রে যাত্রীকে ৬০শতাংশ বেশি ভাড়া গুণতে হবে। বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরতে হবে যাত্রীসহ পরিবহন শ্রমিকদের। তবে ঈদের পর আরো কয়েকদিন পরিবহন চলাচল জারি রাখার দাবি জানান পরিবহন শ্রমিকরা।

খুলনা গেজেট/ টি আই

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!