খুলনা মহানগরীর গল্লামারী মোড়ে ভ্যানের উপর আয়না, চিরুনি, ঘড়ি, বেল্ট, চশমা, মানিব্যাগ, রুমাল ও বিভিন্ন সাজ সরজ্ঞাম বিক্রি করেন রমজান শেখ। গত বছরের শুরুতে ঋণ নিয়ে এই ব্যবসায় শুরু করেছিলেন তিনি। কিন্তু তার কিছু দিন পরেই দেশজুড়ে লকডাউন। বেঁচাকেনা ভালো না হওয়াতে এখনো শোধ করতে পারেননি ঋণের সম্পূর্ণ টাকা। কাল থেকে আবার শুরু হচ্ছে সাত দিনের লকডাউন। গত বছরের মতো দীর্ঘ সময়ের জন্য লকডাউনের ফাঁদে আটকা পড়লে পথে বসা ছাড়া উপায় থাকবেনা তার। খুলনা গেজেটকে লকডাউন নিয়ে দুশ্চিন্তার কথা এভাবেই জানিয়েছেন এই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।
করোনা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকে যাওয়ায় সোমবার ( ৫ এপ্রিল) থেকে এক সপ্তাহের জন্য সারাদেশে লকডাউন দিচ্ছে সরকার। এই লকডাউনের খবরে নিম্ন আয়ের মানুষের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। রবিবার (৪ এপ্রিল) নগরীর গল্লামারী, বানরগাতী, ময়লাপোতা মোড়ের ফুটপাতের দোকানি, রিক্সা চালক, ভ্যান চালক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীসহ নিম্ন আয়ের মানুষের সাথে আলাপকালে জানা যায় তাদের দুশ্চিন্তার কথা।
কথা হয় ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিনের সাথে। তিনি রাস্তার পাশে ভ্যানে কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ, রসুন, আদা বিক্রি করেন। খুলনা গেজেটকে তিনি বলেন, “করোনায় এমনিতেই ব্যবসায় বাণিজ্য ডাউন। সবাইতো আর সরকারি চাকারি করে না যে মাস গেলেই বেতন পাবো। এহন আবার লকডাউন আসলে তো আমাদের জন্যি মরণ।”
বানরগাতী এলাকার রিক্সা চালক মন্টু মিয়া বলেন, “এই গরমে দিনের বেলা বেশি টিপ মারতে পারিনা। বিকাল আর সন্ধ্যার পরই যা ইনকাম হয়। লকডাউনে গাড়ি চালাইতে না পারলে পোলাপানরে খাইতে দিবো কি আর আমরাই বা বাঁচমু কেমনে।”
গল্লামারী হল রোডের ভ্যান চালক ওহিদুলও খুলনা গেজেটকে বলেন তার দুশ্চিন্তার কথা। পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট পরিবারের ওহিদুলই একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তিনি বলেন, “লকডাউন দিলে বিপদে পড়বে আমাদের মতো গরীব মানুষ জন। সরকারের উচিত আমাদের মতো দিন মজুরদের কথা মাথায় রেখে অন্য কোনো উপায় বের করা।”