খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে র্যাবের ও জেলা প্রশাসনের যৌথ অভিযানে দলাল চক্রের ৩২ সদস্যকে আটক করা হয়েছে। এদের ১৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে। ১৪ জনকে অর্থদন্ড দেওয়া হয়েছে। সোমবার (২৩ আগস্ট) বেলা পৌনে ১১ টার দিকে বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের আটক করা হয়। সাজা প্রাপ্তদের কারাগারে আর বাকীদের অর্থ প্রাপ্ত অর্থ দন্ডের মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়া হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছ, মাঝে র্যাবের অভিযানে দালালদের দৌরাত্ম কমে গিয়েছিল। কিন্তু অভিযান না থাকায় তাদের উপদ্রব বেশ বেড়ে গেছে। খুলনা জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে আসা মানুষকে তারা প্রতিনিয়ত ঠকায়। এমনকি শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করে। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে আজ র্যাব খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে ৩২ জনকে আটক করে।
পিরোজপুর থেকে মায়ের চিকিৎসা করতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসেছেন মিলন শেখ। বৃহস্পতিবার সন্ধায় এখানে ভর্তি হওয়ার কারণে তিনি মায়ের পরীক্ষা নিরীক্ষা করাতে পারেননি। শুক্রবার সপ্তাহিক ছুটি হওয়ার কারণে সেদিনও অসুস্থ মায়ের শারীরিক পরীক্ষা করাতে পারেননি। ওই দিন সকালে জনৈক এক দালালের মাধ্যমে সোনাডাঙ্গা ডক্টরস ল্যাবে পরীক্ষা করাতে যান। সেখান থেকে বলা হয় শুক্রবার সন্ধ্যায় টেষ্টের রিপোর্ট দেওয়া হবে। তিনি যথাসময়ে হাজির হয়ে রিপোর্ট হাতে পাননি। তাকে বলা হয় শনিবার দেওয়া হবে। সেদিনও তাকে দেওয়া হয়নি। পরবর্তীতে তিনি বিষয়টি র্যাবের কাছে জানান।
এ ব্যাপারে র্যাবের পরিচালক লে: কর্ণেল মোশতাক আহমদ বলেন, স্বাস্থ্যসেবা আমাদের একটি মৌলিক চাহিদা। নাগরিক তার স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার অধিকার রাখে। স্বাস্থ্যসেবা যখন পাল্টে যাচ্ছিল তখনও দালাল চক্র নাগরিকের গৃহিত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত করার পায়তারা করছিল। হাসপাতাল ও ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে বড় পরিসরে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করি। দালল চক্রের সদস্যদের আটক করতে সক্ষম র্যাব। বিভিন্ন বিচার বিশ্লেষণ করে ৩২ জনকে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। এদের মধ্যে ১৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয়েছে। নাগরিকদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করণে যে বাধা দিবে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। সামনে অভিযান আরও জোরদার করা হবে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অপ্রতিম কুমার চক্রবর্তী বলেন, দালালদের ২ সপ্তাহের বেশী সময় ধরে টার্গেট করে রাখা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা তৎতপরতা চালিয়ে আজ তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। সকালে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা খুলনার বাইরের রোগীদের ভুল বুঝিয়ে হাসপাতালের বাইরে নিয়ে যায়। তারা সরকাররি হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা সেবা নিতে বাধা দেয়। ৩৪ জনকে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে ১৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। ১৪ জনকে জরিমানা করা হয়েছে। ২ জনের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রামানিত না হওয়ায় তাদের খালাস দেওয়া হয়েছে।
হাসপাতালের পরিচালক মো: রবিউল হাসান বলেন, মাঝে মধ্যে আমরা অভিযান চালায়। অভিযান সফল হয় না।অভিযানের খবর পেয়ে অনেকেই পালিয়ে যায়। র্যাব গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে এদের আটক করতে সক্ষম হয়েছে।