ঘরের দুয়ারে কড়া নাড়ছে পবিত্র রমজান মাস। এর আগেই চোখ রাঙ্গাতে শুরু করেছে বেগুন। বেড়েছে চিনির দাম। থেমে নেই শসাও। সবমিলিয়ে রমজানের আগে বাজার বেশ গরম। তবে কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ীরা বলেছেন দু থেকে তিন দিনের মধ্যে বেগুন ও শসার দাম কমে সাধারণ ক্রেতাদের নাগালে চলে আসবে।
রমজান এলেই বাজারে প্রতিটি জিনিষের দাম বাড়ে। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। শুক্রবার (১ এপ্রিল) নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। বেগুন প্রতিকেজি মানভেদে ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত তিন দিন আগেও ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতিকেজি চিনিতে দু’টাকা বেড়ে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শসা ২০ টাকা বেড়ে কেজি ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
নগরীর সান্ধ্য বাজারের ব্যবসায়ী মো: হামিদ জানান, দু’দিন ধরে বেগুনের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। খুলনার ট্রাক টার্মিনালের কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ীরা কিছু না জানিয়ে হঠাৎ এ পণ্যটির দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে তাকে সরবরাহ স্বল্পতার কথা জানানো হয়েছে। ফলে বেশী দরে কিনে এনে এ দমে বিক্রি করতে হচ্ছে তাকে।
একই বাজারের ব্যবসায়ী রসুল বলেন, আমদানি কমে গেলে সে জিনিষের দাম একটু বাড়ে। মোকামের ব্যাপারীরা তাদের বেগুন সংকটের কথা জানিয়েছে। তবে কতদিন বাজার দর এরকম স্থায়ী থাকবে তা তিনি বলতে পারেনি। বাজারে চাহিদা আছে কিন্তু সরবরাহ কম। তাই বেগুনের দাম বেড়েছে। শসা ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে তার দোকানে। তবে রোজা পাঁচ অথবা ছয়টা অতিক্রম করলে এ পণ্যটির দাম কমে যাবে বলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
রূপসা বাজারের ব্যবসায়ী কাজল বলেন, বেগুনের সংকট হওয়ার কথা নয়। ভাল ফলন হয়েছে এবার। রমজান এলে পাইকারী ব্যবসায়ীরা মূল্যবৃদ্ধির প্রতিযোগীতায় নামেন। এর ফলে সাধারণ ক্রেতাদের পকেট কাটা যায়।
তবে বাড়েনি ছোলা, মুড়ি ও চিড়ার দাম। বেড়েছে চিনির দাম। প্রতিকেজি চিনি এখন ৮০ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
নগরীর নিউমার্কেটের মেসার্স মাহবুব ষ্টোরের মালিক মো: মাহফুজ বলেন, রমজান এলে প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়ে। কিন্তু এবার তার ব্যতিক্রম ঘটেছে। প্রতিকেজি ছোলার দাম পাঁচ টাকা কমে গিয়ে ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাড়েনি মুড়ির দাম, আগের দাম ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চিড়া ও বেসন যথাক্রমে ৬০ ও ৭০ টাকায় বিক্রি করছেন তিনি। তবে চিনির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বলে তার দাবি। প্রতি কেজিতে দু’ টাকা করে বৃদ্ধি পেয়েছে।
সান্ধ্য বাজারে কথা হয় সরকারি চাকরীজীবী হেলেনা আক্তার পপির সাথে। তিনি বলেন, বেগুনের দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। গত দু’দিন আগেও বেগুন ৪০ টাকায় কিনেছি। আজ এটি ক্রয় করতে এসে বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয় তাকে। দাম শুনে রীতিমতো আকাশ থেকে পড়ার মতো অবস্থা। ডাবল দামে ক্রয় করতে হয়েছে তাকে। দাম না কমলে এবার তিনি ইফতারে বেগুনী খাবেন না। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ভোক্তা অধিকার নামে সরকারি একটি প্রতিষ্ঠান আছে, তাদের কাজ বাজার তদারকি করা। তারা এখন কি করছেন, এ প্রশ্ন তার।