খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বর্হিবিভাগের মেডিকেল অফিসার ডাঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের শুরু থেকে কোন ছুটি নেননি। ডিউটি রোস্টার মেনে নিয়মিত সেবা করে গেছেন রোগীর। সেবা দিতে দিতেই তিনি সপরিবারে আক্রান্ত হন মরণঘাতি এই ভাইরাসে। দীর্ঘদিন হাসপাতালেও ভর্তি থেকেছেন। তবে ভীত হয়ে দমে যাননি। সুস্থ হয়ে আবারও সেবা দিয়ে যাচ্ছেন রোগীদের।
গত ২৮ জুন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বর্হিবিভাগে চর্ম বিভাগে রোগী দেখার সময় দুইজন শিক্ষানবীস চিকিৎসকসহ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হন ডাঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন। তার মাধ্যমে তার স্ত্রী ডাঃ ফাতেমা বিনতে আজাদ, মা ও ভাইও এই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে জীবনের সাথে যুদ্ধ করেন। ১৪ দিন পরে পরিবারের অন্যরা করোনা দ্বিতীয় নমুনা পরীক্ষায় নেগেটিভ আসলেও তার স্ত্রী ডাঃ ফাতেমা বিনতে আজাদ আবারও পজেটিভ হন। এরপর ডাঃ মামুন করোনা নেগেটিভ আসলেও শারীরিকভাবে সুস্থ না হওয়ায় বিভিন্ন পরীক্ষা করিয়ে নিজের লাঞ্চে করোনার থাবায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি হন। দীর্ঘ ১ মাস হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিয়ে তিনি সুস্থ হলেও তার স্ত্রীর করোনা নেগেটিভ আসে দীর্ঘ ৬২ দিন পর। এর ভেতরে চার বার করোনা পজেটিভ হয়েছিলেন তিনি। সুস্থ হয়েই সাথে সাথে চলে আসেন নিজের কর্মস্থলে, ফের শুরু করেন রোগী দেখা। ডাঃ মামুন করোনার জরুরী অবস্থায় হাসপাতালে সেবা সীমিত হলেও নিজে প্রতিনিয়ত সেবা করে রোগীদের মন জয় করেছেন।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস শেষ করে ডাঃ মামুন বর্তমানে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উচ্চশিক্ষার জন্য যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ডাঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “আক্রান্ত হবার একদিন পরই আমার স্ত্রী, মা ও ভাই অসুস্থ হয়। তারপর সম্পূর্ণ বাসাা একটি হাসপাতালে পরিণত হয়। আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে সকলের দোয়ায় আমরা আবার সুস্থ হয়েছি। তিনি বলেন, নিজেকে নিয়ে কিছু না ভাবলেও পরিবারের অন্যদের সুস্থতা নিয়ে চিন্তা করা, সব মিলিয়ে একটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে আমাদের। তবুও রোগীর সেবা দিতে গিয়ে করোনা আক্রান্ত হলেও সমস্যা নেই।
তিনি বলেন, করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জনবলের একটা বড় অংশ করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে নিয়োজিত রয়েছে। অসম্পূর্ণ জনবল দিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল পরিচালনা করে অনেক সময় অনেক কিছুর ঘাটতি থাকে। তারপরও চিকিৎসকরা আন্তরিকতার সাথে রোগীদের সেবা দেয়ার চেষ্টা করে।
খুলনা গেজেট / এমএম