পশ্চিম রূপসার মাছের আড়তের পাশে একটি বাজারে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। বেলা পৌনে এগারোটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ওই বাজারের ৩০ টি ও বাজার সংলগ্ন বস্তির পাঁচটি ঘর আগুনে পুড়ে যায়। অগ্নিকান্ডের ঘটনায় প্রায় কোটি টাকার মালামাল পুড়ে ছাই হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
আগুন লাগার সাথে সাথে বাজার ও আশপাশের এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সংবাদ পেয়ে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা ছুটে আসেন। তাদের সাথে স্থানীয় জনতাদের অগ্নি নির্বাপনের কাজ করতে দেখা যায়। কোন হতাহতের সংবাদ পাওয়া যায়নি। সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন কেসিসি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।
এলাকাবাসির ভাষ্য অনুযায়ী, রূপসা মাছের বাজারের পাশে রয়েছে ফলের বাজার। বাজারের ঘরগুলোর পাশে মাছ সংরক্ষনের জন্য ককসিট ও ঝুড়ি রাখার একটি ঘর রয়েছে। সে ঘর থেকে মূলত: এ আগুনের সূত্রপাত।
প্রত্যক্ষদশী রুহুল আমিন বলেন, ঘটনস্থলের পাশে একটি চায়ের দোকনে চা পান করছিলেন। হঠৎ দেখেন ধোয়া। এরপর আগুন দেখে তিনি চিৎকার করতে থাকেন। পাশের লোকজন ছুটে আসে। কিন্তু এর মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়রা পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরবর্তীতে ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে দশ মিনিট পর তার ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। ধোঁয়ার কুন্ডলির কারণে চারপাশে অন্ধকার হয়ে যায়। বাজারের ভেতর কেউ প্রবেশ করতে পারেনি।
ওই বাজারের যুগ্ম সম্পাদক জাহিদুর রহমান ঝন্টু বলেন, প্রায় ৩০ টির মতো ঘর পুড়েছে। মাছ সংরক্ষণের জন্য ককসিট ও ঝুড়ি রাখার একটি ঘর ছিল। আড়তে কার্যক্রম শেষে ওই ঘরের পাশে মানুষের আড্ডা হয়। সেখানে দাড়িয়ে অনেকে সিগারেট পান করে। সিগারেটের আগুন থেকে এখানে আগুন লেগেছে বলে তার ধারণা। অগ্নিকান্ডের ঘটনায় এ বাজারের ব্যবসায়ীদের প্রায় কোটি টাকার মালামাল পুড়ে গেছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে ক্ষতিপূরণের জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ করেছেন তিনি।
ব্যবসায়ী মো: রবিউল ইসলাম রবিন জানান, অগ্নিকান্ডের সময় তিনি বাইরে ছিলেন। মোবাইলে সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। আড়তে নগদ টাকাসহ প্রায় ২৫ লাখ টাকার মালামাল ছিল। আগুনে পুড়ে তা ছাই হয়ে গেছে। এঘটনায় তিনি নি:স্ব হয়েছেন।
ওই বাজারের ব্যবসায়ী পরিমল রায় বলেন, বিয়ের মঞ্চ সাজানোর ব্যবসা তার। ঘটনাস্থলে ছিলেন না। মোবাইল পেয়ে ছুটে আসেন। এসে দেখেন আগুনে পুড়ে ব্যবসার মালামাল পুড়ে সব ছাই হয়ে গেছে। ঘটনাস্থলে এসে তিনি অঝরে কাঁদছিলেন।
বাজার সংলগ্ন সুলতানের বাড়ির ভাড়াটিয়া শাম্মি আক্তার ঘটনাস্থলে দাড়িতে কাঁদছিলেন। আগুনে তার সব পুড়ে গেছে। পরনের জামা ছাড়া আর কিছু নেই তার। তার স্বামী বাজারের মধ্যে চায়ের ব্যবসায় করেন। আগুন লাগার পর থেকেই সেখানে ছিলেন তিনি।
টুটপাড়া ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, পৌনে এক ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। আগুনে ৩০-৩৫ টি দোকান ও বসতঘর পুড়েছে। এছাড়া সামান্য ক্ষতি হয়েছে আরও ১০-১৫টি ঘর। এরমধ্যে ৩০টির মতো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা বিষয়টি দেখছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি বিদ্যুতের শর্টসার্কিটে আগুন লাগতে পারে। তবে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ এখনও জানা যায়নি। সার্বিক বিষয়ে কাজ চলছে। এ ঘটনায় তাদের দু’জন সদস্য সামান্য আহত হয়েছেন।
খুলনা গেজেট/এনএম