খুলনা, বাংলাদেশ | ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ১৯ মে, ২০২৪

Breaking News

রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান সাতক্ষীরাবাসী

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রতারক সাহেদ করিমকে গ্রেফতার করায় খুশি সাতক্ষীরাবাসী। করোনা ভাইরাস পরীক্ষার নামে জালিয়াতি করে সাধারণ মানুষের লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে সাতক্ষীরার মাটি ও মানুষকে কলঙ্কিত করেছে সাহেদ। তাকে গ্রেফতারে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন সাতক্ষীরার সর্বস্তরের মানুষ।

সাহেদের বাড়ি ছিল সাতক্ষীরা শহরের প্রাণকেন্দ্র কামালনগর এলাকায় সাতক্ষীরা-কালিগঞ্জ সড়কের কাছে। তার বাবার নাম সিরাজুল করিম। মা সাফিয়া করিম দীর্ঘদিন ধরে সাতক্ষীরা জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছে। ছোটবেলা থেকেই সাহেদ ঢাকায় থাকতেন। এজন্য সাতক্ষীরার বেশিরভাগ মানুষ আগে থেকে তাকে চিনতেন না। সাফিয়া করিম মারা যাওয়ার পর সাহেদের বাবা সিরাজুল করিম সাতক্ষীরার সব সম্পত্তি বিক্রি করে চলে যান ঢাকায় ছেলের বাসায়। রিজেন্ট হাসপাতাল সিলগালা করে দেয়ার কয়েকদিন পরে করোনা আক্রান্ত হয়ে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন
অবস্থায় মারা যান তিনি। সাহেদের রিজেন্ট হাসপাতালের করোনা সার্টিফিকেট কেলেংকারি ফাঁস হওয়ার পর সাতক্ষীরার মানুষ প্রথম সাহেদ করিম সর্ম্পকে বিস্তারিত জানতে পারেন।

এদিকে জেলার বেশিরভাগ মানুষ সাহেদকে না চিনলেও সবাই একবাক্যে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। সাতক্ষীরার সব রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের জনগণ প্রত্যেকেই তার অপকর্মের শাস্তি দাবি করেছেন। সাহেদ করিমকে গ্রেফতারের খবর শোনার পরপরই রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও জনপ্রতিনিধিসহ সাতক্ষীরার সাধারণ মানুষ স্বস্তি প্রকাশ করেন। এর পাশাপাশি তারা সাহেদের শাস্তি দাবি করেন।

সাতক্ষীরা শহরের ভ্যানচালক নওশের আলী বলেন, ‘বেশ কয়েকদিন ধরে টেলিভিশনের খবরে শুধু সাহেদকে দেখছিলাম। সে নাকি দুর্নীতি করে অনেক টাকার মালিক হয়েছে। আমরা গরিব মানুষ। অতশত বুঝি না। যে মানুষের জীবন নিয়ে ব্যবসা করে তার বেঁচে থাকার অধিকার নেই আমাদের দেশে। র‌্যাব ওই প্রতারককে দ্রুত গ্রেফতার করায় সাতক্ষীরাবাসী প্রথম দফায় আনন্দিত। তার কঠোর শাস্তি হলে সাতক্ষীরার মানুষ আরও খুশি হবে।

সাতক্ষীরা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদৎ হোসেন বলেন, ‘তার মতো একজন প্রতারকের অপরাধের দায় সাতক্ষীরাবাসী নেবে না। প্রতারক সাহেদের জন্ম সাতক্ষীরায় হলেও সাতক্ষীরায় তার খুব একটা যাতায়াত ছিল না। একদিকে সাতক্ষীরায় জন্ম নিয়ে সে তার জেলাকে কলঙ্কিত করেছে। অন্যদিকে পালাতে গিয়ে সাতক্ষীরার সীমান্তে এসে আবারও সাতক্ষীরার পবিত্র মাটিকে কলঙ্কিত করল। তারপরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিশেষ করে র‌্যাবের সদস্য শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানের পর তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে এতে আমার সাতক্ষীরাবাসী আনন্দিত।তার কঠোর শাস্তির মধ্য দিয়ে সাতক্ষীরার মাটি কলঙ্কমুক্ত হবে বলে আমরা মনে করি।’

সাতক্ষীরা নাগরিক আন্দোলন মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান বলেন, ‘করোনা টেস্টের ভুয়া রিপোর্ট প্রদান, অর্থ আত্মসাতসহ প্রতারণার মামলায় বহুল আলোচিত রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদকে গ্রেফতার করায় সাতক্ষীরাবাসী আনন্দিত, উচ্ছাসিত। সাহেদের মত একজন প্রতারককে গ্রেফতারে র‌্যাবের এই অভিযানকে আমরা স্বাগত জানাই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়াকড়ির পরেও সাহেদ কিভাবে সাতক্ষীরা পর্যন্ত পৌঁছলো তা খতিয়ে দেখা দরকার। এছাড়া যারা তাকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত নিয়ে এসে সীমান্ত দিয়ে পার করার অশুভ পাঁয়তারা করেছিল তাদেরকেও চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা দরকার।’

প্রসঙ্গতঃ গত ৬ ও ৭ জুলাই উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতাল এবং রিজেন্ট গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ে র‌্যাবের অভিযানের পর থেকে পলাতক ছিলেন সাহেদ। বুধবার ভোরে সাতক্ষীরায় গ্রেফতারের পর একটি হেলিকপ্টারযোগে তাকে ঢাকায় নেয়া হয়।

খুলনা গেজেট/এনএম 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!