খুলনা, বাংলাদেশ | ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ১৯ মে, ২০২৪

Breaking News

  নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলা, নিহত ১৭

রাশিয়ার শীর্ষ কমান্ডারদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

দুই বছর পেরিয়ে ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ গড়িয়েছে তৃতীয় বছরে। দীর্ঘ এই সময়ে রুশ আগ্রাসন ও ইউক্রেনের পাল্টা হামলায় হয়েছে হাজারও মানুষের প্রাণহানি। ঘর-বাড়ি হারিয়ে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন লাখো মানুষ।

এমন অবস্থায় রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কমান্ডারদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে শীর্ষ রুশ কমান্ডারদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। পরোয়ানায় আইসিসি যে দুজন কমান্ডারের নাম উল্লেখ করেছে, তারা হলেন- সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট জেনারেল সের্গেই কোবিলাশ এবং নৌবাহিনীর অ্যাডমিরাল ভিক্টর সোকোলভ।

ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের সাথে সম্পর্কিত যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে রাশিয়ান কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এটি আইসিসির দ্বিতীয় দফা ওয়ারেন্ট। এর আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং তার শিশুদের অধিকার বিষয়ক দূতের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল।

রাশিয়া আইসিসিকে স্বীকৃতি দেয় না। তাই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি পরও রুশ এই কমান্ডারদের অভিযোগের মুখোমুখি হওয়ার জন্য তাদের আদালতের হাতে তুলে দেওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কম।

আইসিসি বলেছে, ‘ইউক্রেনীয় বৈদ্যুতিক অবকাঠামোতে এই দুই সন্দেহভাজন ব্যক্তি তাদের কমান্ডের অধীনে থাকা বাহিনীর মাধ্যমে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা’ চালিয়েছেন বলে বিশ্বাস করার মতো যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকার কারণেই সর্বশেষ পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

কথিত অপরাধগুলো ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৩ সালের মার্চের মধ্যে সংঘটিত হয়েছিল বলেও আইসিসি জানিয়েছে। আদালত বলেছে, এসব হামলা বেসামরিক মানুষের ক্ষতি করেছে এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও স্পষ্টতই অনেক বেশি।

আদালত বলেছে, এই দুই ব্যক্তির ‘প্রত্যেকই বেসামরিক বস্তুতে হামলা চালানোর কারণে যুদ্ধাপরাধের জন্য দায়ী’ এবং ‘মানবতাবিরোধী অপরাধের অমানবিক কাজের জন্যও তারা অভিযুক্ত’।

বিবিসি বলছে, ৫৮ বছর বয়সী সের্গেই কোবিলাশ উল্লিখিত অপরাধের সময় রাশিয়ান বিমান বাহিনীর দূরপাল্লার বিমান চলাচলের কমান্ডার ছিলেন। অন্যদিকে ৬১ বছর বয়সী ভিক্টর সোকোলভ রাশিয়ান নৌবাহিনীর একজন অ্যাডমিরাল ছিলেন, যিনি অপরাধের সময়কালে রাশিয়ার নৌবাহিনীর কৃষ্ণসাগরীয় নৌবহরের কমান্ডার ছিলেন বলে আইসিসি জানিয়েছে।

রাশিয়া অবশ্য অতীতে ইউক্রেনের বেসামরিক অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু করার কথা অস্বীকার করেছে। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের নতুন ওয়ারেন্টকে স্বাগত জানিয়েছেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেছেন, ‘রাশিয়ান কমান্ডারদের যারা ইউক্রেনের বেসামরিক নাগরিক এবং গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর বিরুদ্ধে হামলার নির্দেশ দেয়, তাদের প্রত্যেকের অবশ্যই জানা উচিত যে- তাদেরকেও ন্যায়বিচার পেতে হবে।’

তার ভাষায়, ‘এই ধরনের অপরাধে জড়িত প্রত্যেক অপরাধীকে অবশ্যই জানতে হবে, তাদেরও জবাবদিহি করতে হবে।’

উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের হাতে বিচারিক ক্ষমতা থাকলেও কোনও অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা নেই। আইসিসি যা করতে পারে তা হলো, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে বিভিন্ন দেশের সহায়তায় গ্রেপ্তার করা এবং গ্রেপ্তারের পরে তাকে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে বিচারের জন্য হাজির করা।

এছাড়া আইসিসি তার বিচারিক ক্ষমতাও শুধু সেসব দেশে প্রয়োগ করতে পারে, যে দেশগুলো এই আদালত গঠন করতে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল। চুক্তিটি রোম সংবিধি নামে পরিচিত। রাশিয়া এই সংবিধিতে স্বাক্ষর করেনি।

এই চুক্তিতে এখন পর্যন্ত ১২৩টি দেশ স্বাক্ষর করেছে। তবে রাশিয়ার পাশাপাশি চীন, ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশও এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেনি।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!