খুলনা নগরীর পীর খানজাহান আলী সেতু সংলগ্ন খান মেজর অটো রাইস মিলে অভিযান চালিয়ে খাবার অনুপযোগী চালের গুদাম সিলগালা করা হলেও সেখানে কোনো নিরাপত্তা প্রহরী নেই। জেলা প্রশাসন, খাদ্য বিভাগ ও র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে গত ৬ জুলাই মিল সিলগালা করা হয়। গত ৪ দিনে সেখানে কোনো নিরাপত্তা প্রহরী দেওয়া হয়নি। মিলে ভারত থেকে আনা চালের পরিমাণ ১ হাজার ৫১৬ মেট্রিক টন।
খাদ্য বিভাগের সূত্র জানায়, ভারত থেকে আনা এ চাল অভিযানের আগেই খাওয়ার অনুপযোগী বলে ঘোষণা করা হয়েছে। ভারত থেকে মোংলা পর্যন্ত আসতে জাহাজের ভেতরে পানি ঢুকে যাওয়ায় ওই চাল খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। গত মাসে পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়া সমুদ্র বন্দর থেকে ৪ হাজার ৯৬৩ মেট্রিক টন চাল নিয়ে জাহাজটি মংলা বন্দরে পৌছায়।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ বাবুল হোসেন জানান, চাল লবণচরার সেতু সংলগ্ন মেজর অটো রাইস মিলে আনার পর নিম্নমানের হওয়ায় তা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য মংলার সহকারি নিয়ন্ত্রক (খাদ্য) মো. জহিরুল ইসলাম ও খাদ্য চলাচল সংরক্ষণ কার্যালয়ের পরিদর্শক অনিন্দ কুমার দাসের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী সোমবারের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।
চাল পরিবহন প্রতিষ্ঠান ম্যাংগো শিপিং লাইন্সের সহকারি জেনারেল ম্যানেজার মো. সোহেল খান জানান, ভারত থেকে চাল আনার পর ৩ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন মহেশ্বরপাশা কেন্দ্রিয় খাদ্য গুদামে খালাসের প্রক্রিয়া চলছে। আমদানিকৃত চালের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় ১ হাজার ৫১৬ মেট্রিক টন চাল লবণচরার খান মেজর রাইস মিলে রাখা হয়। এই চালেরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। তিনি জানান, নিম্নমানের চাল রাখার জন্য গত ৭ জুন মিল কর্তৃপক্ষের সাথে চুক্তি হয়। ভিন্ন পথে চাল বাজারজাতকরণের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পর্যালোচনার জন্য অপেক্ষা করছি মাত্র।
র্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া সহকারি পরিচালক মো. বজলুর রশীদ জানান, অভিযোগ পাওয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে মিলটি সিলগালা করা হয়েছে।
মিলের শ্রমিক রুহুল আমিন জানান, মিল চত্বরে পলিথিন দিয়ে এবং গুদামে চাল রাখা হয়েছে। এর নিরাপত্তায় কোনো প্রহরী নেই। এমনকি মিল মালিক পক্ষের কোনো প্রতিনিধিও এখানে থাকেন না।
উল্লেখ্য, লবণচরার খান মেজর অটো রাইস মিলের মালিক কামরুল ইসলাম খান গত বছরের ২৬ আগস্ট হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার পর তার পুত্র মাহমুদ আলম খান বাবু মিলটি পরিচালনা করছে। গেল অর্থ বছরে নবায়ন না করায় মিলটির লাইসেন্স বাতিল হওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
খুলনা গেজেট/এনএম