যশোর জেনারেল হাসপাতালে পুলিশ দেখে রোগী নিয়ে পালবার সময় তাড়াহুড়োয় স্বর্ণা খাতুন (২২) নামে এক নারীর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি শহরতলী শেখহাটি এলাকার ফজলে আলীর মেয়ে।
সূত্র জানায়, মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে স্বর্ণা খাতুন রক্ত শূণ্যতা, পেটে ব্যাথা ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে যশোর জেনারেল হাসপাতালের মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি হন। সন্ধ্যায় তার মা রোজিনা বেগম হাসপাতালে রোগীকে একা রেখে রাতের খাবার ও টাকা আনতে বাড়িতে যান। এ সময় ওয়ার্ডে ডাক্তার এসে রোগীকে একটি আল্ট্রাসনোগ্রাম করার পরামর্শ দেন। রোগীর সাথে কেউ না থাকার সুযোগ কাজে লাগিয়ে হাসপাতালের সামনের একটি ক্লিনিকের দালাল মনির তাকে ট্রলিতে তুলে ক্লিনিকে নিয়ে যেতে থাকেন। রোগী বহনের সময় হাসপাতালে জরুরি বিভাগের সামনে পুলিশ দেখে মনির ভয় পেয়ে দ্রুত ট্রলি ঠেলে রোগী নিয়ে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে ক্লিনিকে যায়। এ সময় হাসপাতালে আগত একাধিক রোগী ও তাদের স্বজনরা মনিরকে অনুরোধ করে রোগীর ট্রলি আস্তে ঠেলতে।
কেননা, আশঙ্কাজনক রোগী হলে তার ক্ষতি হতে পারে। কিন্তু মনির এসব কথা না শুনে রোগী নিয়ে দ্রুত হাসপাতাল ত্যাগ করে। এরপর ওই ক্লিনিকে গিয়ে মনির রোগীর আল্ট্রাসনোগ্রাম করাবার জন্য ক্যাশ মেমো করান। কিন্তু এসময় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ জানায়, রোগী মারা গেছে। তার আল্ট্রসনোগ্রাম করানো যাবে না। এ খবর শুনে মনির রোগী রেখে পালিয়ে যায়।
মৃত রোগীর পিতা ফজলে আলীর অভিযোগ, তার মেয়ের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্যে কাউকে দায়িত্ব দেয়া হয়নি। তারা কেউ ওয়ার্ডে না থাকার সুযোগ কাজে লাগিয়ে দালাল রোগী নিয়ে ক্লিনিকে চলে গেছে। কিন্তু হাসপাতালের কোনো ডাক্তার, সেবিকা বা ওয়ার্ড বয় বাধা দেয়নি। আগে থেকেই তার প্রতিবন্ধী মেয়ের শরীর দুর্বল ছিলো। দালাল রোগী নেয়ার সময় পুলিশ দেখে তাড়াহুড়ো করায় তার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। তিনি এ হত্যার বিচার চান।
এ ব্যাপারে হাসপাতালে দায়িত্বরত এএস আই আবু সালেহ জানান, হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগাবার সময় দালাল মনির তাদের একটি টিমকে দেখতে পেয়ে রোগী নিয়ে দ্রুত হাসপাতাল ত্যাগ করে। পরে দালালকে খোঁজ করতে গিয়ে দেখেন সে পালিয়েছে। রোগী ট্রলিতে পড়ে আছে। পরে তিনি লাশ উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, এ মৃত্যুর ঘটনায় পরিবার থেকে অভিযোগ দেয়া হলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
খুলনা গেজেট/এনএম