খুলনা, বাংলাদেশ | ৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  নিউইয়র্কে ছুরিকাঘাতে নিহত ২

যশোর কারাগারে দুই খুনির ফাঁসি কার্যকরে প্রস্তুত মঞ্চ, জল্লাদদের প্রশিক্ষণ শেষ

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে সোমবার দু’হত্যাকারীর ফাঁসি কার্যকর হবে। এ লক্ষ্যে ফাঁসির মঞ্চ প্রস্তুত, স্বজনদের শেষ দেখা ও জল্লাদদের প্রশিক্ষণও শেষ হয়েছে। ইচ্ছানুযায়ী শেষ খাবার হিসেবে তারা বার্গার ও মুরগীর গ্রিল খেয়েছেন।

২০০৭ সালের ১০ আগস্ট ফাঁসির আসামি হিসেবে যশোর কারাগারে প্রবেশ করেন মিন্টু ও আজিজুর। দীর্ঘ ১৪ বছর পর আজ রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে ওই দু’জনের ফাঁসি কার্যকর হবে। বর্তমানে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের ১৬ নম্বর কনডেম সেলের এক নম্বর কক্ষে রয়েছেন মিন্টু ওরফে কালু। তিনি চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার রায়ের লক্ষীপুর গ্রামের আলী হিমের ছেলে। দুই নম্বর কক্ষে রয়েছেন একই গ্রামের বদর ঘটকের ছেলে আজিজুর রহমান ওরফে আজিজুল। তারা আলমডাঙ্গা উপজেলার জোরগাছা হাজিরপাড়া গ্রামের কমেলা খাতুন ও তার বান্ধবী ফিঙ্গে বেগমকে ধর্ষণের পর হত্যা করেন।

যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্র জানিয়েছে, রোববার দুপুরে যশোরের সিভিল সার্জন ডাক্তার শেখ আবু শাহীনের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল টিম যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার পরিদর্শন করেন। এর আগে শনিবার দুপুরে দুই আসামির পরিবার যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে শেষ দেখা করার জন্যে যান। তাদের এক ঘণ্টার বেশি সময় কথা বলার সুযোগ দেয়া হয়।

এছাড়া, শনিবার বিকেলে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের ফাঁসির মঞ্চে বালির বস্তা ব্যবহার করে জল্লাদ মশিয়ার ও কেতু কামালকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। ওইসময় কেন্দ্রীয় কারাগারের ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র জেল সুপার জাকির হোসেন (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) উপস্থিত ছিলেন।

কারাগারের অপর একটি সূত্র জানায়, রোববার ফাঁসির দু’আসামির শেষ ইচ্ছা জানতে চাওয়া হবে। এসময় তারা বার্গার ও মুরগির গ্রিল খেতে চাইলে দুপুরে তাদেরকে এ খাবার পরিবেশন করা হয়। এছাড়া তারা পরিবারের বিষয়ে নানা কথা জেল কর্তৃপক্ষকে জানান।

মামলা সূত্রে জানা যায়, চুয়াড়াঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার জোড়গাছা হাজিরপাড়া গ্রামের কমেলা খাতুন ও তার বান্ধবী ফিঙ্গে বেগম ২০০৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর খুন হন। হত্যার আগে তাদের দু’জনকে ধর্ষণ করা হয় বলে পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় । প্রতিবেদনে বলা হয়, গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধের পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে গলা কাটা হয় ওই দুই নারীকে। এ ঘটনার পরদিন নিহত কমেলা খাতুনের মেয়ে নারগিস বেগম আলমডাঙ্গা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত দু’জনসহ চারজনকে আসামি করা হয়। অপর দু’জন হলেন, সুজন ও মহি।

মামলা বিচারাধীন অবস্থায় মারা যান মহি। ২০০৭ সালের ২৬ জুলাই চুয়াডাঙ্গার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল সুজন, আজিজ ও মিন্টুকে মৃত্যুদন্ড দেয়। পরে ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল শুনানি শেষে হাইকোর্ট তা বহাল রাখে। চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ দু’ আসামির রায় বহাল রেখে সুজনকে খালাস প্রদান করে। গত ২০ জুলাই যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান সুজন।

এদিকে, গত ৬ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষার আবেদন নাকচ হয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে চিঠি পাঠানো হয়। যা ৮ সেপ্টেম্বর যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছায়।

এ বিষয়ে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলর তুহিন কান্তি খান বলেন, দু’ আসামির ফাঁসির সকল প্রস্তুতি তারা শেষ করেছেন। সোমবার রাত ১০ টা ৪৫ মিনিটে জেলা ও পুলিশ প্রশাসন ও সিভিল সার্জনের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ফাঁসি কার্যকর করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!