যশোরের চৌগাছা উপজেলার স্বামী মজনু হত্যার দায়ে স্ত্রীর যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও অর্থদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তাজুল ইসলাম এ আদেশ দেন। সাজাপ্রাপ্ত মর্জিনা খাতুন চৌগাছার ঝিনাইকুন্ডু গ্রামের মৃত মজনুর রহমান মজনুর স্ত্রী। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের অতিরিক্ত পিপি আসাদুজ্জামান আসাদ।
আদালত সূত্রে জানা যায়, চৌগাছা উপজেলার সিংহঝুলী গ্রামের মজনুর রহমান মজনুর সাথে তারই মামাতো বোন ঝিনাইকুন্ডু গ্রামের মর্জিনার বিয়ে হয়। আর্থিকভাবে দুর্বল থাকায় মজনুর তার শ্বশুর বাড়ি এলাকায় নানা শ্বশুর বাহার আলীর বাড়িতে থাকতেন।
বিয়ের পর তাদের সংসারে দুটি সন্তান জন্ম নেয়। এরই মাঝে বিয়ের প্রায় ২০ বছর পর ২০১৬ সালের ১০ মার্চ রাতে ঘরের আড়ার সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় মজনুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে আত্মহত্যা করেছে এমনটি প্রচার হয়। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়।
এদিকে, তার ময়না তদন্ত রিপোর্টে উঠে আসে মজনু আত্মহত্যা করেনি। তাকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় ২০১৬ সালের ১২ আগস্ট মজনুর মা জেলেখা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে চৌগাছা থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি প্রথমে তদন্ত করেন চৌগাছা থানার এসআই জামাল হোসেন। পরবর্তীতে এ মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি। সিআইডির তদন্তে উঠে আসে এ হত্যার সাথে জড়িত ছিলেন স্ত্রী মর্জিনা নিজেই।
সিআইডি পুলিশ পরিদর্শক হারুন অর রশিদ মর্জিনাকে অভিযুক্ত করে ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি আদালতে চার্জশিট জমা দেন। এরপর আদালতের নিকট প্রতীয়মান হয় মজনু শারীরিকভাবে অসুস্থ্য ছিলেন ও তেমন কোনো কাজ করতে পারতেন না। অভাবের সংসারে ওইদিন খাবার নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ঝগড়া হয়। এছাড়া প্রতিবেশি এক নারীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক ছিলো মজনুর। এসব বিষয় নিয়ে রাগে ক্ষোভে স্বামীকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে মর্জিনা। পরে তার লাশ ঘরের আড়ার সাথে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচার চালায় মর্জিনা বেগম।
এ মামলায় আদালত মঙ্গলবার মর্জিনার উপস্থিতিতে স্বামীকে হত্যার দায়ে তার যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদন্ডের আদেশ দেন।
খুলনা গেজেট/ টিএ