যশোরে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে পাশবিক নির্যাতন করে হত্যার দায়ে স্বামীর ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক নিলুফার শিরীন এ আদেশ দেন। আসামি ওসমান আলী ঝিকরগাছা উপজেলার দিঘড়ি গ্রামের আককাজ আলীর ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর পিপি মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল।
আদালত সূত্র জানায়, ঝিকরগাছা উপজেলার সোনাকুড় গ্রামের সন্তোষ আলীর মেয়ের রাশিদা খাতুনের সাথে আসামি ওসমানের বিয়ে হয়। পরে বেরিয়ে আসে ওসমান পরনারী আসক্ত ও তার একাধিক বিয়ে রয়েছে। বিয়ের পর তাদের একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। মেয়ের জন্মের পর থেকে ওসমান যৌতুকের দাবিতে রাশিদার উপর শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন চালাতে থাকে। বেশ কয়েকবার হত্যারও চেষ্টা করে।
সর্বশেষ ২০০৪ সালের ৭ মার্চ রাত সাড়ে ১১টার পর কয়েকজনকে নিয়ে বাড়িতে যায় ওসমান । পরে রাশিদার উপর পাশবিক নির্যাতন করে তাকে হত্যা করে ওসমান। পরদিন সকালে রাশিদার মৃত্যুর খবর শুনে পরিবারের লোকজন আসে। এলাকাবাসীর হত্যার বিষয়টি জানালে ওসমান বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে পাঁচজনের বিরুদ্ধে যশোর আদালতে মামলা করেন। আদালতের নির্দেশে মামলাটি ঝিকরগাছা থানায় এজাহার হিসেবে গ্রহণ করা হয়। মামলায় দিঘড়ি গ্রামের সাবুলের ছেলে কুতুব আলী , রজব আলীর ছেলে ফজর আলী, আব্দুল খালেকের ছেলে সাদেক আলী ও একই গ্রামের কালুকে আসামি করা হয়। অভিযোগ করা হয়, তারা একত্রে প্রথমে রাশিদাকে ধর্ষণ করে পরে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে।
এদিকে, মামলাটি ঝিকরগাছা থানার এসআই হাবিবুর রহমান তদন্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন। চার্জশিটে অপর চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে অব্যহতির আবেদন জানানো হয়। সর্বশেষ সোমবার এ মামলার রায় ঘোষণা করে আদালতে। রায়ে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় ফাঁসির আদেশ ও এক লাখ টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত করা হয়। বর্তমানে আসামি ওসমান পলাতক রয়েছে।