যশোর থেকে ট্রেনে চড়ে পদ্মা সেতু দিয়ে তিন ঘণ্টায় ঢাকায় যাওয়ার স্বপ্ন বাঁচাতে রেল অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে বৃহত্তর যশোর রেল যোগাযোগ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটি। আগামী মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে যশোর রেলওয়ে জংশনে এ অবরোধ কর্মসূচি পালিত হবে। এতেও দাবি আদায় না হলে পরবর্তী সময়ে আরও কঠোর কর্মসূচি গ্রহণেরও ঘোষণা দেয়া হয়েছে। শনিবার (৩০ নভেম্বর) যশোর রেলওয়ে জংশন প্ল্যাটফর্মে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান বৃহত্তর যশোর রেল যোগাযোগ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার রুহুল আমিন। তিনি বলেন, যশোর-ঢাকা-পদ্মা সেতু লিংক প্রজেক্টের উদ্বোধনী দিনে বেনাপোল-যশোর-নড়াইল-ঢাকা রুটে দুটি ট্রেন চালুসহ দর্শনা-যশোর-নড়াইল-ঢাকা রুটে দুটি ট্রেন চালু, নিজ শহর থেকে প্রতিদিন ঢাকায় অফিস করার জন্য ট্রেনের সময়সূচি তৈরি, আন্তঃনগর ট্রেনে সুলভ বগি যুক্ত করা, ট্রেনের ভাড়া বাস ভাড়া থেকে কম রাখা, ট্রেনের টিকিট প্রাপ্তির সহজ পদ্ধতি চালু, সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা এবং দর্শনা-খুলনা রেলপথ দ্রুত ডাবল করাসহ ছয় দফা দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন-সংগ্রাম চলছে। শোনা যাচ্ছে, খুব দ্রুতই পদ্মবিলা জংশন-নড়াইল-ভাঙ্গা হয়ে ঢাকায় রেল চলাচল শুরু হতে যাচ্ছে।
রুহুল আমিন বলেন, গত ২৪ নভেম্বর ঢাকা-নড়াইল-খুলনা রুটে পরীক্ষামূলক রেল চলাচল করেছে। কিন্তু যশোরে এখনও এ ধরনের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ফলে নতুন এই রুটে যশোর থেকে কখন, কীভাবে ও ক’টি ট্রেন চলাচল করবে, তার কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। এ কারণে তারা পদ্মা সেতু রেল প্রকল্পের সুবিধা পেতে ৩ ডিসেম্বর দুপুর ১টায় রেলপথ প্রতীকী অবরোধ ঘোষণা করেছেন। দাবি না মানলে কঠোর কর্মসূচি, অর্থাৎ পূর্ণ রেলপথ অবরোধের কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।
তিনি আরও বলেন, এই প্রকল্প শুরুর আগে ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য তারা যশোর, মোবারকগঞ্জ ও কোটচাঁদপুর প্রতিদিন তিনটি ট্রেন পেতেন। এগুলো যমুনা সেতু হয়ে চলাচল করত। এই রুটে দুটি ট্রেন রাজবাড়ী-ভাঙা-পদ্মা সেতু হয়ে চলাচল করছে। গত ছয় মাস ধরে শোনা যাচ্ছে, যশোর-ঢাকা-পদ্মা সেতু লিংক প্রজেক্ট শুরু হলে খুলনার ট্রেনগুলো যশোরে আসবে না। সিঙ্গিয়া স্টেশনের পর ট্রেনগুলো গতিপথ পরিবর্তন করে পদ্মবিলা জংশন হয়ে ঢাকায় চলে যাবে। যশোর দিয়ে একটি মাত্র ট্রেন বেনাপোল এক্সপ্রেস যাওয়া-আসা করবে। মোবারকগঞ্জ, কোটচাঁদপুরবাসী ঢাকায় যাওয়া-আসার জন্য একটি ট্রেনও পাবে না।
বৃহত্তর যশোর রেল যোগাযোগ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক জিল্লুর রহমান ভিটু বলেন, ২৪ নভেম্বর ঢাকা-খুলনা রুটে পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানো হলেও যশোর বাইরে থাকল, যা যশোরের মানুষকে ক্ষুব্ধ করে তুলেছে। এ কারণে বৃহত্তর যশোর রেল যোগাযোগ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটি অবরোধের মতো কর্মসূচি গ্রহণে বাধ্য হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বৃহত্তর যশোর রেল যোগাযোগ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আমিনুর রহমান হিরু, ফারাজী আহমেদ সাঈদ বুলবুল, অধ্যক্ষ শাহীন ইকবাল, যুগ্ম সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান মিলন, সংগ্রাম কমিটির নেতা আবুল হোসেন, মাহমুদ হাসান বুলু, খন্দকার আজিজুল হক মনি, নাজিমউদ্দীন, মাহমুদ রিবন, শেখ আলাউদ্দিন, নাসির উদ্দিন আহমেদ শেফার্ড প্রমুখ।
খুলনা গেজেট/ টিএ