যশোরে যৌতুকের দাবিতে মারপিটের দায়ে পুলিশের এসআই আজম মাহমুদকে তিনবছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসআই আজম যশোরের মণিরামপুর উপজেলার কাশিমপুর গ্রামের বজলুর রহমানের ছেলে। মামলার চার্জশিট হওয়ার পর তিনি বরখাস্ত হয়ে কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনে সংযুক্ত ছিলেন।
বৃহস্পতিবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক নীলুফার শিরিন আসামিকে এ কারাদণ্ড প্রদান করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এসময় বিশেষ পিপি-২ মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল উপস্থিত ছিলেন। পিপি জানান, এ মামলায় আজম মাহমুদের বিরুদ্ধে তার মা ফিরোজা বেগম সাক্ষ্য দিয়েছেন। তিনি আদালতে পুত্রবধূর ওপর গা শিউরে ওঠা নির্যাতনের বর্ণনা দেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, আসামি আজম মাহমুদ পুলিশে কর্মরত থাকা অবস্থায় ঝিকরগাছার কৃষ্ণনগর গ্রামের একরাম আলীর মেয়ে রাবেয়া আক্তারের সাথে ২০০০ সালে বিয়ে করেন। এএসআই পদে প্রোমশনের সময় আসামিকে দেড়লাখ টাকা ও এসআই পদে প্রোমশনের সময় পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দিয়েছিল স্ত্রী রাবেয়ার পরিবার। তাদের সংসারে দুটি সন্তানের জন্ম হয়। এরপর আজম ফের পাঁচ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে মারপিট করতে থাকে। টাকা না পেয়ে ভরণ পোষন ও বন্ধ করে দেয়। এছাড়া চাকরির সুবাদে আজম যেখানে পোস্টিং হয় সেখানে মেয়েদের সাথে অবৈধ সম্পর্ক ও বিয়ে করেন। সবশেষ আজম মাহমুদ বাগেরহাটে কর্মরত থাকা অবস্থায় প্রথম স্ত্রীর অনুমতি না নিয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস নামে এক মেয়েকে বিয়ে করেন। এ অভিযোগের ভিত্তিতে বাগেরহাট পুলিশ সুপার তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে সত্যতা পায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আসামি ২০১৯ সালের ২৭ জুন আজম মাহমুদ বাড়িতে এসে স্ত্রীকে বেধড়ক মারপিট করেন। তাতে বাদী গুরুতর অসুস্থ্য হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাও নেন। পরে বিষয়টি পারিবারিকভাবে মিমাংশা করার চেষ্টা করলেও রাবেয়ার পরিবার ব্যর্থ হন। শেষমেষ ২০১৯ সালের ১১ জুলাই স্ত্রী রাবেয়া আক্তার যৌতুকের দাবিতে মারপিটের অভিযোগে আদালতে মামলা করেন। এ মামলার দীর্ঘ স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামি আজম মাহমুদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।
খুলনা গেজেট/ টি আই