অবশেষে প্যানামুক্ত হয়েছে যশোরে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্যরে নির্দেশে জেলা প্রশাসন এ উচ্ছেদ অভিযান চালায়। রাতব্যাপী অভিযান শেষে শনিবার সকাল ১০টার মধ্যে ম্যুরালের আশপাশে থাকা সকল ব্যানার, প্যানা ও ফেস্টুন উচ্ছেদ করা হবে। সরিয়ে ফেলা হবে দু’পাশের দুটি তোরণও।
শুক্রবার (১৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল পরিদর্শনকালে প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য এ নির্দেশনা দেন জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খানকে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পৌর মেয়র হায়দার গণি খান পলাশ, স্থানীয় সরকার বিভাগ যশোরের উপপরিচালক হুসাইন শওকত, ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হুসাইন প্রমুখ। মন্ত্রীর উপস্থিতিতে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু প্যানা ও ফেস্টুন নামিয়ে ফেলা হয়।
শোকের মাস আগস্টকে ঘিরে যশোরে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে প্যানা ও ব্যানার টাঙানোর প্রতিযোগিতা শুরু করেন কিছু নেতা। শহরের বকুলতলায় অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালের চারপাশে প্যানা ফেস্টুন এমনভাবে টাঙানো হয়, যাতে ঢেকে যায় ম্যুরালটি। সৌন্দর্যহানি ঘটে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালের। শ্রদ্ধা জানানোর জন্যে নির্মিত হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ম্যুরাল আড়ালে চলে যায় নেতাকর্মীর অসুস্থ প্রতিযোগিতায়।
একেবারে অচেনা থেকে শুরু করে জেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতারা বিশাল বিশাল প্যানা তৈরি করে ঝুলিয়ে দেন বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালের আশপাশে। যা দৃষ্টি কাড়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ মুজিবভক্তদের। শুরু হয় সমালোচনা। মুজিবভক্তরা দাবি তোলেন প্যানা ফেস্টুন অপসারণের। বিষয়টি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্যরে দৃষ্টিতে যায়। তিনি এদিন বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালের সৌন্দর্য ফেরানোর সিদ্ধান্ত উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এরপর সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তাদের নিয়ে তিনি ম্যুরাল পরিদর্শনে যান। সেখানে দাঁড়িয়ে থেকে বেশকিছু প্যানা ফেস্টুন তিনি নামিয়ে দেন। এরপর জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন শনিবার সকাল ১০ টার মধ্যে সব প্যানা ফেস্টুন অপসারণ করার। নির্দেশ দেন ম্যুরালের দুই পাশে নির্মিত সুউচ্চ দুইটি তোরণ অপসারণেরও।
ম্যুরালের আশপাশের প্যানা ফেস্টুন সরিয়ে ফেলার খবরে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ভিড় করেন সেখানে। অনেকেই জানার চেষ্টা করেন রাস্তার পাশে স্থাপিত প্যানা ফেস্টুন সরানো লাগবে কিনা। বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালের আশপাশের প্যানা-ফেস্টুন দেখে মনে হচ্ছিল শোকের মাস উৎসবের মাসে পরিণত করেছেন কেউ কেউ! যা ছিল চরম দৃষ্টিকটু। অনেক প্যানায় সাবেক এবং বর্তমান নেতাদের ছবি ছিল বঙ্গবন্ধুর ছবির চেয়ে বড়। যা ছিল চরম আপত্তিকর। শোকের মাসকে পুঁজি করে নেতাদের দৃষ্টিতে যেতে এ প্রতিযোগিতা শুরু হয়। যেটি শ্রদ্ধা জানানোকে ম্লান করে দিচ্ছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, প্যানা, ফেস্টুনে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ঢেকে যাচ্ছিল। এ কারণে সেগুলো সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শনিবার সকাল ১০ টার মধ্যে সবকিছু অপসারণ করা হবে।
খুলনা গেজেট /এমএম