শুক্রবার একরাতে যশোরের পাম্প মালিকরা কোটি টাকার অবৈধ মুনাফা আয় করেছেন। এদিন ৯টার পর থেকে দেশে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির খবরে যশোরের পাম্পগুলোতে তেল কেনার হিড়িক পড়ে। কিন্তু ক্রেতারা তেল পাননি। রাত ১০টার পরই পাম্পগুলো বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে কর্মচারীদের সাথে ক্রেতাদের বাকবিতন্ডার সৃষ্টি হয়। ক্রেতাদের অভিযোগ তেলের মূল্যবৃদ্ধির সুযোগ নিয়ে পাম্প মালিকরা কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
যশোরে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির খবর রাত ৯টা নাগাদ ফেসবুকের কল্যাণে প্রচার হয়ে যায়। এরপর থেকে মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকার চালকরা তেল কিনতে পাম্পগুলোতে ছোটাছুটি করে। এসময়ে কিছুসংখ্যক গাড়ির চালক সামান্য পরিমাণ তেল পেলেও রাত ১০টার পর যশোরের কোন পাম্পে আর তেল পাওয়া যায়নি। তেল থাকা সত্বেও কর্তৃপক্ষ পাম্প বন্ধ করে বাড়ি চলে যায়। ফলে তেল কিনতে আসা মানুষ হতাশ হয়ে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করে। এসময় তাদের সাথে পাম্প কর্মচারীদের বাকবিতন্ডা হয়। শহরের মনির উদ্দীন ফিলিং স্টেশন, যাত্রিক, তোফাজ্জেল হোসেন, চয়নিকা, ভৈরব ফিলিং স্টেশনসহ সকল পাম্পে একই অবস্থার সৃষ্টি হয়। এসব পাম্পে মোটরসাইকেল চালকদের ব্যাপক ভিড় ছিল।
গাড়ি চালকদের অভিযোগ মূল্যবৃদ্ধির আগে যশোরের দুই ডজন পাম্পে পর্যাপ্ত তেল ছিল। কিন্তু বৃদ্ধির খবর পেয়ে মালিকরা পাম্প বন্ধ করে বাড়ি চলে যায়। তাদের উদ্দেশ্য ছিল একটাই অবৈধভাবে তেল মজুদ রেখে মুনাফা অর্জন করা। এভাবে যশোরের দু’ডজন পাম্প মালিক একরাতেই কোটি টাকার অবৈধ মুনাফা আয় করেছেন বলে গাড়ির মালিকরা জানিয়েছে।
এ বিষয়ে নাম গোপন রাখার শর্তে একটি পাম্পের কর্মচারী জানান, শুক্রবার রাত ৯টায় মালিক কর্তৃপক্ষ নির্দেশনা দেয় তেল বিক্রি করা যাবে না। লাইট বন্ধ করে তাদের সাইডে সরে থাকতে বলা হয়।
এদিকে, সারাদেশে জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক হারে মূল্যবৃদ্ধিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পরিবহণ সেক্টরে সংশ্লিষ্ট নেতৃবৃন্দসহ সকল পেশার মানুষ। তারা দাবি করেছেন বৈশ্বিক কারনে যদি বৃদ্ধি করতেই হয়, তাহলে অল্প হারে বৃদ্ধি করলে সমস্ত সেক্টরে মানুষের কষ্ট কম হতো। হঠাৎ অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি হওয়ায় বাস মালিক, শ্রমিক, মোটরসাইকেল চালক, প্রাইভেট চালকসহ কৃষকরা হতাশা প্রকাশ করেছেন। এ কারণে শনিবার সারাদিন যশোর শহরে মোটরসাইকেলসহ যানবাহন চলাচল অপেক্ষাকৃত কম দেখা গেছে। বিভিন্ন রুটের পরিবহনেও যাত্রীদের কাছ থেকে ইচ্ছামত ভাড়া আদায় করা হয়েছে। এক্ষেত্রে মানুষের কিছু বলার ছিল না। তারা চাহিদামত ভাড়া দিয়েই গন্তব্যে পৌছেছেন।
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে শনিবার যশোর জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে শহরের বিভিন্ন সড়কে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলে নেতৃত্ব দেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত।
উল্লেখ্য, সারাদেশে ৬ আগষ্ট থেকে বর্ধিতমূল্যে ডিজেল বিক্রি হচ্ছে ১১৪ টাকা লিটার, যা ছিলো ৮০ টাকা। পেট্রোল আগে ছিলো ৮৬ টাকা, বাড়িয়ে করা হয়েছে ১শ’৩০ টাকা ও অকটেন ছিলো ৮৯ টাকা, যা ১৩৫ টাকা লিটার করা হয়েছে।
খুলনা গেজেট / আ হ আ