যশোরের অভয়নগর উপজেলার চামড়া মিলের নারী শ্রমিককে এসিড নিক্ষেপ ও পিটিয়ে হত্যা মামলার আসামি শামীম হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ। শামীম অভয়নগর উপজেলার জাফরপুর গ্রামের খন্দকার মোশারফ হোসেনের ছেলে।
অভয়নগর উপজেলার কাদিরপাড়া গ্রামের লুৎফর রহমান মজুমদারের দায়ের করা মামলা সূত্রে জানা গেছে, তার বোনের মেয়ে কেয়া খাতুন এক যুগ আগে স্বামী পরিত্যক্ত হয়ে মেয়ে নিয়ে বাদীর বাড়িতে ঘর নির্মাণ করে বসবাস করতো। আসামি শামীম হোসেন তাদের দুর সম্পর্কীয় আত্মীয়। কেয়া খাতুন এবং আসামি শামীম হোসেন দু’জনেই অভয়নগরের তালতলাস্থ আকিজ গ্রুপের এসএএফ লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে শ্রমিক পদে কাজ করতেন। একই সাথে তারা মিলে কাজ করার সুবাদে কেয়া খাতুনকে আসামি শামীম প্রেম ও বিয়ের প্রস্তাব দিতেন। কিন্তু প্রেম এবং বিয়ে কোনটাতেই রাজি না হওয়ায় কেয়া খাতুনকে ক্ষতি করার সুযোগ খুঁজছে থাকে শামীম।
২০২১ সালের ২৫ অক্টোবর দিনের বেলায় মিলে দায়িত্ব পালন করছিলেন কেয়া খাতুন। একইদিনে শামীম হোসেনও দায়িত্ব পালনে ছিলো। ওইদিন দুপুর দেড়টার দিকে মিলের ক্রাস্ট ইউনিটের ভেতরে খাওয়া-দাওয়া শেষে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন কেয়া। সেই সুযোগে শামীম সেখানে প্রবেশ করেই কেয়াকে খারাপ প্রস্তাব দেয়। এতে কেয়া রাজি না হলে শামীমের হাতে থাকা একটি প্লাস্টিকের মগে রাখা এসিড কেয়ার গায়ে ঢেলে দেয়। কেয়া চিৎকার করলে পাশে থাকা লোহার পাইপ দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে তাকে মারাত্মক আহত করে শামীম পালিয়ে যায়। কেয়ার চিৎকারে আশপাশে থাকা মিলের অন্যান্য শ্রমিকরা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। এই ঘটনার পর খবর পেয়ে কেয়ার মামা লুৎফর রহমান মজুমদার হাসপাতাল থেকে তার মরদেহ গ্রহণ করেন। এরপরে তিনি শামীমরে বিরুদ্ধে অভয়নগর থানায় এসিড নিক্ষেপ ও পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে মামলা করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জয়ন্ত সরকার তদন্ত শেষে রোববার এসিড নিক্ষেপ ও পিটিয়ে হত্যার অভিযোগের স্বাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করেন।