যশোরে দুই কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। গভীর রাতে একটি প্রতিষ্ঠানে ঢুকে সার নিয়ে নয়-ছয় ও অবৈধভাবে জরিমানা এবং সিলগালা করার অভিযোগে এ মামলা দায়ের হয়েছে। অভিযুক্তরা হলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ঢাকার উপ-পরিচালক (সার ব্যবস্থাপনা ও সরেজমিন উইং) আমিনুল ইসলাম এবং যশোর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান আলী।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) যশোর সদর উপজেলার ঘুরুলিয়া গ্রামের মেসার্স এ আর অ্যাগ্রো কেমিকেলের স্বত্বাধিকারী রাজু আহমেদ বাদী হয়ে এ মামলাটি করেছেন। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম কিবরিয়া অভিযোগের তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সিআইডি যশোর জোনের বিশেষ পুলিশ সুপারকে আদেশ দিয়েছেন।
মামলায় বাদী বলেছেন, রাজু আহমেদের বিভিন্ন প্রকার সার উৎপাদনের জন্য তার বৈধ সনদ রয়েছে। তার কারখানায় উৎপাদিত প্রতি কেজি জিংক ফসফেট ১৬০ টাকা এবং ম্যাগনেশিয়াম সালফেট প্রতি কেজি ৩০ টাকা। অপরদিকে বহুজাতিক কোম্পানি সিনজেনটা উৎপাদিত জিংক ফসফেট গ্রোজিন ৩৩০ টাকা এবং ম্যাগনেশিয়াম সালফেট ম্যাগমা প্রতি কেজি ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়। রাজু আহমেদের পণ্যের দাম কম হওয়ায় কৃষকদের মাঝে চাহিদা বেশি।
এ জন্য সিনজেনটা কোম্পানি মেসার্স এ আর অ্যাগ্রো কেমিক্যালের কারখানাটি বন্ধ করতে ওই দুই কৃষি কর্মকর্তাকে অনৈতিকভাবে প্রভাবিত করে। সিনজেনটার পক্ষ নিয়ে কোম্পানির প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ২০২৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর গভীর রাতে মেসার্স এ আর অ্যাগ্রো কেমিক্যালের কারখানা এবং গুদামের তালা ভেঙে কারখানায় যান অভিযুক্তরা। তারা উৎপাদিত সারের নমুনা না সংগ্রহ করে সার প্রক্রিয়া করণের নমুনা নিয়ম বহির্ভূতভাবে সংগ্রহ করেন এবং কারখানা সিলগালা করে দেন।
পরবর্তীতে কৃষি কর্মকর্তারা সার প্রক্রিয়া করণের নমুনা গবেষণাগারে পাঠান। পরীক্ষাগার থেকে রিপোর্ট দেওয়া হয়, ওই সার মানসম্মত না। এরই প্রেক্ষিতে যশোর সদর কৃষি কর্মকর্তা হাসান আলী সার ব্যবস্থাপনা আইনে রাজু আহমেদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। এরপর রাজু আহমেদ আদালতে আবেদন করেন, কারখানা থেকে না, বাজার থেকে তার উৎপাদিত সারের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করার জন্য।
আদালত তার আবেদন মঞ্জুর করেন এবং তদন্ত কর্মকর্তাকে বাজার থেকে রাজু আহমেদের সারের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাজার থেকে সারের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠালে সেখান থেকে রিপোর্ট দেওয়া হয়, সার মানসম্মত। এই রিপোর্টের প্রেক্ষিতে তদন্ত কর্মকর্তা ২০২৪ সালের ২৫ মার্চ আদালতে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। বাদীর দাবি তার উৎপাদিত সার নিয়ে যা করা হয়েছে, দা পূর্বপরিকল্পিত। অন্য কোম্পানি থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে আসামিরা তাকে হয়রানি করার জন্য এসব করেছেন।
খুলনা গেজেট/ টিএ