যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটিতে কাঠ ব্যবসায়ী গোলাম মোস্তফাকে টাকার কারণে খুন করা হয়েছে। এ খুনে জড়িত ছিল দুইজন। বুধবার রাতে পুলিশ গোলাম মোস্তফা হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র (ছুরি) উদ্ধার করেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে যশোরের পুলিশ সুপার আশরাফ হোসেন প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
এসপি জানান, গোলাম মোস্তফা হত্যাকান্ডে জড়িত আটক আব্দুল্লাহ ও শহিদুলকে নিয়ে পুলিশ খুনের স্থান পরিদর্শন করে। আব্দুল্লাহ চুড়ামনকাঠি গ্রামের উত্তরপাড়ার আব্দুর রহমানের ছেলে ও শহিদুল ইসলাম যশোর শহরের মনিহার এলাকার বাসিন্দা। সে পেশায় বাস চালক।
চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আনিসুর রহমান জানান, কাঠ ব্যবসায়ী গোলাম মোস্তফা খুনে জড়িত সন্ধেহে আটক আব্দুল্লাহ ও শহিদুলকে বুধবার রাতে ঘটনাস্থলে নিয়ে যায় পুলিশ। আব্দুল্লাহর স্বীকারোক্তিতে তার বাড়ির একপাশে লুকিয়ে রাখা ধারালো অস্ত্রটি উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কাঠ ব্যবসায়ী গোলাম মোস্তফা খুনের রহস্য উদঘাটন হয়েছে। আব্দুল্লাহ ও শহিদুল এ হত্যাকান্ডে জড়িত ছিল। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় আব্দুল্লাহ ও গোলাম মোস্তফা প্রথমে শহরের মনিহার এলাকায় যায়। সেখান থেকে শহিদুলকে সাথে নিয়ে তারা যায় চুড়ামনকাটি বাজারে। এরপর ধার করা একটি পালসার মোটরসাইকেল করে গোলাম মোস্তফা, আব্দুল্লাহ ও শহিদুল যায় চৌগাছা উপজেলার সলুয়া গ্রামে। সেখানে তারা তিনজন ফেনসিডিল সেবন করে। এরপর চুড়ামনকাঠি বাজারে ফিরে আসে, সেখান থেকে তারা গাঁজাও সেবন করে। রাত ৮টার দিকে তারা চুড়ামনকাটির ভৈরব নদের পাড়ে যায়। এখানে আব্দুল্লাহ ছুরি দিয়ে পিছন থেকে গোলাম মোস্তফার গলায় আঘাত করে। এসময় তাদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এক পর্যায়ে শহিদুল, গোলাম মোস্তফাকে জাপটে ধরে ও আব্দুল্লাহ তাকে গলা কেটে হত্যা করে। পরে মৃতদেহ ভৈরব নদে ফেলে কচুরিপনা দিয়ে ঢেকে রেখে তারা পালিয়ে যায়।
আব্দুল্লাহ পুলিশকে আরো জানিয়েছে, মোস্তফার কারণে তার বিভিন্ন সময় ১০ লাখ টাকা খোয়া গেছে। কাঠ ব্যবসায় এ টাকা বিনিয়োগ করে তিনি আর ফেরত পাননি। টাকা ফেরত চাইলে মোস্তফা টালবাহানা করতো। এ কারণে মোস্তফাকে খুনের পরিকল্পনা করে আব্দুল্লাহ। এ কাজে সহযোগিতা করে তার পূর্ব পরিচিত শহিদুল।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সালাউদ্দিন শিকদার, তৌহিদুর রহমান, গোলাম রব্বানী, ডিবি ওসি সৌমেন দাস প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত ২৪ অক্টোবর বিকেলে কাঠ ব্যবসায়ী গোলাম মোস্তফা ৫০ হাজার টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর তাতে আর খুজে পাওয়া যায়নি। পরদিন সকালে চুড়ামনকাটির ভৈরব নদ থেকে তার গলা কাটা লাশ উদ্ধার হয়।
থুলনা গেজেট/এনএম