যশোরের মণিরামপুরে এক গৃহবধুকে অপহরণের পর ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। সাবেক এক ইউপি সদস্য এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে ওই নারী যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঘটনাটি গত রোববারের হলেও এতদিন অভিযুক্তরা ওই পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিলো বলে জানিয়েছে সদস্যরা। শুক্রবার বিকেলে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভিকটিম পরিবারের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের এসব কথা জানানো হয়।
হাসপাতালে ভর্তি থাকা ওই নারী জানান, উপজেলার ভোজগাতি ইউনিয়নের গুলাডাঙ্গা গ্রামের চান্দার ছেলে সাবেক ইউপি সদস্য জাকির হোসেন প্রায় ওই নারীকে উত্যক্ত করতো। তার স্বামী দোকানে থাকায় বিভিন্ন সময় জাকির বাড়িতে এসে কু-প্রস্তাবও দিতেন। এ বিষয়ে প্রতিবাদ করলে নানা ধরণের হুমকি ধামকি দিতেন জাকির। সর্বশেষ গত রোববার বিকেলে একটি প্রাইভেটকার নিয়ে তার বাড়ির সামনে যায় জাকিরসহ আরও কয়েকজন। সে সময় তার স্বামী বাড়িতে ছিলেন না। এ সুযোগে জোর করে তাকে প্রাইভেটকারে তুলে যশোর শহরে নিয়ে যায়। পরে একটি ঘরে আটকে রেখে ভয়ভীতি দেখিয়ে রাতভর ধর্ষণ করে জাকির। একথা জানালে তাকে ও তার স্বামীকে হত্যার ভয় দেখিয়ে পরদিন তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। পরে ওই নারী বাড়িতে গিয়ে পরিবারকে বিষয়টি জানায়। এ বিষয়ে পরিবার আইনি পদক্ষেপ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। বিষয়টি জাকির জানতে পেরে তাদেরকে বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রাখে। এছাড়া নানা ধরণের হুমকি দিতে থাকে। পরে ওই নারী আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে অবস্থা বেগতিক দেখে জাকির ও তার লোকজন তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। এসময় তার স্বামীও সাথে ছিলো। হাসপাতালে তাকে ভর্তি করে স্বামীকে জোর করে গাড়িতে উঠিয়ে ফের মণিরামপুরের দিকে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে তার স্বামী জানায়, কয়েকদিন ধরে তারা বাড়ি থেকে বের হতে পারছিলেন না। জাকিরের লোকজন তাদেরকে জিম্মি করে রেখেছিলো। স্ত্রীর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় জাকির নিজেই হাসপাতালে ভর্তি করেছে। পরে এ বিষয়ে যাতে কাউকে না জানানো হয় সেজন্য তাকে মণিরামপুরে নিয়ে যাচ্ছিলো। রাজারহাট পর্যন্ত পৌছালে তিনি ডাকচিৎকার শুরু করেন। পরে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে। লোকজনকে বিষয়টি জানালে জাকিরসহ তার লোকজন গাড়ি থেকে তাকে নামিয়ে সটকে পরে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত জাকিরের কাছে জানতে চাইলে তিনি এসব কথা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন এটি ষড়যন্ত্র। যা এলাকার মেম্বর চেয়ারম্যানরা জানেন।
এ বিষয়ে মণিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ নুরে আলম সিদ্দিকি জানান, এ বিষয়ে এখনো কেউ থানায় কোন অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আব্দুস সামাদ জানান, ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে আসা এক গৃহবধূকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিজ উদ্যোগে চিকিৎসকরা আলামত সংগ্রহ করেছেন। পুলিশ চাইলে রিপোর্ট দেয়া হবে।
খুলনা গেজেট/ টি আই