যশোরে এবার জেলা প্রশাসকসহ সরকারি পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। কেশবপুর উপজেলার কোমরপুর গ্রামের কবরস্থানের জমিতে ভূমিহীনদের জন্য ঘর নির্মাণের পরিকল্পনার কারণে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে। উপজেলার সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নের আকবর আলী, আব্দুল হামিদ ও আব্দুর রশিদ বাদী হয়ে গত ১৯ জানুয়ারি যশোরের সহকারী জজ আদালতে দেওয়ানী এ মামলাটি করেন।
মামলায় জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান ছাড়াও অন্য বিবাদীরা হলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নের ৪৬ নম্বর কোমরপুর মৌজার ২৭৯ খতিয়ানের ৬০৫ ও ৬১৫ দাগে এক একর ৩০ শতক জমি ক্রয় সূত্রে ভোগদখল করছেন গ্রামের মৃত মইজ উদ্দীন গাজীর ছেলে আকবার আলী গাজী, আব্দুল হামিদ ও আব্দুর রশিদ। এরমধ্যে ২৬ শতক জমিতে রয়েছে পারিবারিক কবরস্থান। এলাকাটি বন্যা কবলিত হওয়ায় ওই কবরস্থানে সার্বজনীন হিসেবে এসএ রেকর্ডের পূর্ব থেকে স্থানীয় লোকজন মরদেহ দাফন করে আসছেন। সে কারণে আরএস রেকর্ড ১ নম্বর খতিয়ানে সরকারের পক্ষে যশোর জেলা প্রশাসকের নামে এটি লিপিবদ্ধ হয়। প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশ সরকার নালিশী জমিতে স্বত্ত্ব দখলদার নয়। আইনগতভাবে কবরস্থানটি জনসম্পত্তিতে পরিণত হয়েছে।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, আশ্রায়ন প্রকল্পের অধীনে ভূমিহীনদের জন্য ঘর নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য বিবাদীরা গত ১০ জানুয়ারি উক্ত কবরস্থান এলাকা পরিদর্শনে গেলে এলাকাবাসী ব্যাপক আপত্তি জানান। তারপরও তারা সেখানে ভূমিহীনদের জন্য ঘর নির্মাণের সিদ্ধান্ত জানালে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে মামলায় বলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, কবরস্থান মামলার বাদীর পূর্বসূরিদের। সুতরাং তাদের অংশ থেকে কবরস্থানের জমি বাদ দেয়া হবে। কোনো ব্যক্তি মালিকানাধীন বা কবরস্থানের জমিতে নয়, আশ্রায়ন প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীনদের পুনর্বাসনের জন্য খাস জমি নির্ধারণ করে সেখানে ঘর নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এমএম আরাফাত হোসেন জানান, সরকার যে স্থানে গৃহহীনদের জন্য ঘর নির্মাণের জন্য জায়গা ঠিক করেছে, সেখানে তারা দীর্ঘদিন অবৈধভাবে ভোগদখল করে আসছে। তাদেরকে উচ্ছেদ করায় এ মামলা করেছে। মামলার বিষয়ে সরকার পক্ষ থেকে জবাব দেয়া হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এমএম