চাল ব্যবসায়ীদের ধর্মঘটের মুখে যশোর পৌরসভা কর্তৃপক্ষ হাটচান্নির বিভিন্ন টোল বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাড়িয়েছে। জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে আগামী তিনমাসের জন্য এ সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়েছে। এতে স্বস্তি ফিরেছে ব্যবসায়ীদের মাঝে।
তবে পৌর কর্তৃপক্ষের দেয়া চিঠিতে ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তারা বলেছেন, পৌর কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ন অবৈধভাবে এ টোল বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ফের যদি টোল বৃদ্ধির কথা বলা হয়, তাহলে তারা আইনের আশ্রয় নেবেন। একই সাথে চাল ব্যবসায়ীরা তাদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শহরের বড়বাজারের হাটচান্নির চালের খাজনা ও দোকানের টোল বৃদ্ধির প্রতিবাদে জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেন ও বুধবার ব্যবসায়ীরা ধর্মঘট পালন করেন। বৃহস্পতিবার সকালে তারা প্রতিদিনের মতই দোকান খুললে বাজার কমিটির পক্ষ থেকে অতিরিক্ত টোল আদায় শুরু করে। তাৎক্ষনিক ব্যবসায়ীরা এর প্রতিবাদ জানিয়ে দোকান বন্ধ করে অনির্দিষ্টকালের ধর্মধটের ডাক দেন।
এরপর বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পৌরসভা জরুরি বৈঠক করে এ টোল বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত তিন মাসের জন্য স্থগিত করে। এ সংক্রান্ত চিঠি রাতেই ব্যবসায়ীদের কাছে পৌছে দেয়া হয়। শুক্রবার সকালে ব্যবসায়ীরা তাদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করে দোকান খুলে ব্যবসা শুরু করেন। তবে তারা চিঠির প্রেক্ষিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, তিনমাস পরও তারা চারগুন বৃদ্ধি করা টোল দেবেন না। গত বছরের নির্ধারিত টোল দেবেন।
এ বিষয়ে যশোর চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম চৌধুরী মুল্লুক চাঁদ বলেন, পৌরসভার টোল বৃদ্ধির কোনো এখতিয়ার নেই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া। নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে মেয়র ব্যবসায়ীদের ক্ষতিগ্রস্ত করে নিজের স্বার্থ হাছিলের জন্য খাজনা বাড়িয়ে দিয়েছেন। এখন না পেরে তিন মাস পরে অবৈধ টোল আদায়ের পায়তারা অব্যাহত রাখার চেষ্টা করছেন। যা ব্যবসায়ীরা মেনে নেবেন না। এ বিষয়ে ফের তারা জেলা প্রশাসকের নিকট জানাবেন, প্রয়োজনে তারা আইনের আশ্রয় নেবেন বলেও হুশিয়ারি দেন এ ব্যবসায়ী নেতা।
বিষয়টি নিয়ে পৌরসভার মেয়র হায়দার গণি খান পলাশের মোবাইলে কল করলে তার একান্ত সহকারী ফোন রিসিভ করেন। তিনি বলেন, মেয়র এখন বাইরে রয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে বাজারের ইজারা গ্রহিতা প্রদীপ কুমার নাথ বাবলু জানান, পৌর মেয়র বড়বাজারের টোল বৃদ্ধি করেছিলেন। তিনিই আবার টোল বৃদ্ধির আদেশ স্থগিত করেছেন। এখানে ইজারা গ্রহিতাদের কোনো বিষয় নেই। করোনায় তারাও ক্ষতিস্ত বলে তিনি দাবি করেন।
উল্লেখ, গত মঙ্গলবার টোল বৃদ্ধির তালিকা নিয়ে হাজির হন বাজার কর্তৃপক্ষ। সেখানে আগে প্রতি একশ’ কেজি চালের বস্তা বাজারে প্রবেশ ও বের হওয়া বাবদ ছয় টাকা ছিল। সেখানে বৃদ্ধি করে ১৫ টাকা ধার্য্য করা হয়েছে। একইসাথে চালের দোকান প্রতি ১০ টাকার পরিবর্তে ১৫ টাকা বাড়ানো হয়।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি