যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) উপাচার্যের আশ্বাসে ১২ দফা দাবিতে চলমান আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করেছে যবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা। দ্রুত লিফট স্থাপন, পরীক্ষার খাতায় কিউআর কোড ও ইমপ্রæভমেন্ট সিস্টেম চালু করার মত দাবিগুলো বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন উপাচার্য। এছাড়া উপাচার্যের এখতিয়ারের বাইরের বিষয়গুলো সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও মন্ত্রণালয়ে জানানো হবে বলে তিনি জানান। এরই প্রেক্ষিতে তিন দিন ধরে চলমান এ আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেওয়া হয়।
আন্দোলনের কারণে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকায় যবিপ্রবিতে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। আন্দোলনের কারণে শিক্ষা কার্যক্রমে বিঘিœত হওয়ায় ঈদের আগে আর কোনো ক্লাস বা পরীক্ষা হবেনা বলেও ঘোষণা দেন উপাচার্য।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সোমবার সকালে প্লাকার্ড, ফেস্টুন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে তৃতীয় দিনের মত অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে আন্দোলনকারীরা। কর্মসূচির একপর্যায়ে যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সাথে দাবির বিষয়ে কথা বলেন। কিন্তু কথা শেষ হওয়ার আগে বাকবিতন্ডার কারণে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন তিনি। পরবর্তীতে দুপুর ২টার দিকে আবারও তিনি তার এখতিয়ারাধীন দাবিগুলো মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন। এসময় উপাচার্যের আশ্বাস মেনে নিয়ে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেয় শিক্ষার্থীরা।
যবিপ্রবি ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানা বলেন, একাডেমিক ভবনে লিফটসহ ১২ দফা দাবি নিয়ে তিনদিন শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলছিল। উপাচার্য আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন, তিনি আগামী ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের লিফট সমস্যার সমাধান করবেন। বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি বিকৃতির মামলায় মহামান্য আদালত যে রায় দিবেন সেটাই মেনে নেবো এবং শিক্ষার্থীদের অন্যান্য দাবিগুলোও সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
যবিপ্রবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর ফয়সাল বলেন, আন্দোলন ছাত্রলীগের একার নয়। এখানে ছাত্রলীগের নিজস্ব চাওয়া পাওয়ার কোনো হিসাব নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে আমাদের এ আন্দোলন। উপাচার্যের প্রতি আশ্বাস রেখে আগামী ১৫ জুলাই পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। তবে নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে পরবর্তীতে নতুন কর্মসূচি জানানো হবে।
এসব বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের ১২ দফা দাবির মধ্যে দ্রæত লিফট স্থাপন, পরীক্ষার খাতায় কিউআর কোড, ইমপ্রæভমেন্ট সিস্টেম চালুর মত আমাদের এখতিয়ারাধীন বিষয়গুলো মেনে নেওয়া হয়েছে। একাডেমিক ভবনের লিফট আগামী ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে স্থাপন করা হবে। সেজন্য শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আবেদন করতে হবে। আরও কিছু দাবি আছে, যেগুলো আমার এখতিয়ারে নাই। আদালতে বিচারাধীন বিষয়ে আমার কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ নেই। কিছু দাবি মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ারাধীন। সেই দাবি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীদের বিষয়ে সরাসরি বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা ও কটূক্তির বিষয়ে যিনি সমালোচনার শিকার হয়েছেন তিনি বিশ্ববিদ্যালয় বরাবর অভিযোগ দিলে প্রশাসন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে বলেও আশ্বাস দেন উপাচার্য।
খুলনা গেজেট/এমএম