ময়না তদন্ত ও ডিএনএ টেষ্টের ফলাফলের অপেক্ষায় রয়েছে ফুলতলা উপজেলার আলোচিত জুট মিল শ্রমিক মুসলিমা হত্যা মামলার চার্জ। এ দুই রির্পোট হাতে এলেই আদালতে মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে। হত্যাকান্ডে সাথে সরাসরি সম্পৃক্ততা ও সহায়তা করার অভিযোগে এ মামলার চারজন আসামি কারাগারে আছে।
২৫ জানুয়ারি রাতে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে প্রথমে মুসলিমাকে ঘর থেকে বের করে নেওয়া হয়। এরপর রিয়াজ ও তার বন্ধু সোহেল ভিকটিমকে নিয়ে বেজের ডাঙ্গা বাজারে ঘুরতে যায়। সেখানে থেকে রিয়াজ তার দুসম্পর্কের দুলাভাই ইউসুফকে ফোন দিয়ে পরিকল্পনা বস্তাবায়নের জন্য একটি ঘর প্রস্তুত রাখতে বলে। তখনও মুসলিমা জানতে পারেনি যে একটু পর তাকে খুন হতে হবে। রাত সাড়ে নয়টার দিকে বেজেরডাঙ্গা থেকে পুনরায় ফুলতলা ফিরে এসে জনৈক মুনসুরের ঘরে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে রিয়াজ। পরবর্তীতে সোহেল ওই ঘরে প্রবেশ করা মাত্রই চিৎকার করে ভিকটিম। ধর্ষণের ঘটনাটি ফাঁস হয়ে যাবে ভেবে দু’বন্ধু মুসলিমাকে ঘরে রেখে বাইরে গিয়ে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
আরও পড়ুন : ফুলতলায় মুসলিমার খন্ডিত মস্তকের দাফন
রাত একটার দিকে মুসলিমাকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার জন্য মুনসুরের বাড়ি থেকে বের হয় তিনজন। কিছু বুঝে ওঠার আগে পথিমধ্যে ভিকটিমের গায়ের ওড়না গলায় পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এরপর আবারও ধর্ষণ করা হয় মৃত দেহকে। মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য গায়ের ওড়না দিয়ে একটি গাছের সাথে ১০ মিনিট ঝুলিয়ে রাখা হয়। মুসলিমার আলামত যেন কেউ দেখতে না পায় সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করা হয়। মাথাটি ফুলতলা উপজেলার নির্মাণাধীন একটি বাড়ির বাথরুমের বালুর ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয়। ২৯ জানুয়ারি সোহেল ও ৩০ জানুয়ারি রিয়াজকে ফরিদপুরের কানাইপুর এলাকা থেকে আটক করা হয়।
তদন্ত কর্মকর্তা বদলী হওয়ার কারণে বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছেন ফুলতলা থানার অফিসার ইনচার্জ মো: ইলিয়াজ তালুকদার। বৃহস্পতিবার(১৭ ফেব্রুয়ারি) তিনি খুলনা গেজেটকে জানান, হত্যাকান্ডে নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে সোহেল ও রিয়াজ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক ধর্ষণ কাজে সহায়তা করার জন্য মুনসুর ও ইউসুফ নামের দু’ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদেরও এ মামলায় আটক দেখানো হয়েছে। ময়না তদন্ত ও ডিএনএ টেষ্টের ফলাফল সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। এ রির্পোট পেতে তিন থেকে চারমাস সময়ের প্রয়োজন হবে। রির্পোটটি হাতে পেলেই মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হবে।
খুলনা গেজেট/ টি আই