খুলনা, বাংলাদেশ | ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ১৯ মে, ২০২৪

Breaking News

  ৭ ব্যক্তিকে জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী
  নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলা, নিহত ১৭

মধুমতির ভাঙ্গনে পাকা সড়ক, বসতভিটা ও ফসলী জমি

মাসুদুল হক, বাগেরহাট

বাগেরহাটের মোল্লাহাটে মধুমতি নদী ভাঙ্গনের শিকার দুটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। প্রতিনিয়ত ভাঙ্গনে ঘরবাড়ি, পাকা সড়কসহ নানা স্থাপনা ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। বাপ দাদার ভিটে-বাড়ি হারিয়ে নিস্ব পরিবারগুলো ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী বাধ নির্মানের দাবি জানিয়েছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড, নির্বাহী প্রকৌশলী জানিয়েছে নদীর তীর রক্ষায় বাঁধের ডিজাইন তৈরি হয়েছে, ডিপিপি তৈরির প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

গতকয়েক বছরে মোল্লাহাটের সোনাপুর ও চরবাশুড়িয়া গ্রামের শতাধিক বসতভিটা, বাড়ি-ঘর, রাস্তা, গাছ-পালা, বিভিন্ন স্থাপনা বিলীন হয়েছে মধুমতির ভাঙ্গনে। ফসলি জমি হারিয়ে নিস্ব হয়েছেন অনেক মানুষ। এখনও থেমে নেই মধুমতির ভাঙ্গন।বিলীন হতে পারে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের সেচ ভবন, সোনাপুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ সরকারি-বেসরকারি অসংখ্য স্থাপনা।

স্থানীয়রা বলেন, মধুমতি নদী ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে গ্রামের অধিকাংশ বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখন আর সরে যাওয়ার জায়গা নেই। বৃষ্টির মৌসুম আসলেই গরু-বাছুর, গাছপালাসহ মূল্যবান সম্পদ নিয়ে আতঙ্কে থাকতে হয়। এই দুই গ্রামের মানুষ ও তাদের জানমাল রক্ষার জন্য স্থায়ী বাঁধ দেওয়া প্রয়োজন।

সোনাপুর গ্রামের নজরুল ইসলাম বলেন, মধুমতির ভাঙ্গনে প্রায় সাত বিঘা জমি হারিয়েছি। তিনবার ঘর সরিয়ে অন্য জায় এনেছি। এরপরের বার ভাঙ্গলে যাওয়ার আর কোন জায়গা থাকবে না।

মুক্তিযোদ্ধা হাসমত শেখ বলেন, চোখের সামনেই অনেকের বাড়ি ঘর নদী গর্ভে বিলীন হতে দেখেছি। ফসলি জমি বাড়ি ঘর হারিয়ে বেঁচে থাকার তাগিদে অন্যত্র পাড়ি জমিয়েছেন অনেকে। এখন যারা এই এলাকায় বসবাস করছেন তাদের অনেকেই ঝুকির মধ্যে রয়েছেন।

স্থানীয় লুৎফর মোল্লা, ইমরান ফকির, মোঃ প্যারিস শেখ, আবেদ আলীসহ কয়েক জন বলেন, মধুমতির ভাঙ্গনে সোনাপুর গ্রামের কয়েক জায়গায় পাকা সড়কটির অর্ধেকাংশ নদীতে বিলীন হয়েছে। অনেকের ফসলী জমিও নদীতে চলে গেছে। বিএডিসির সেচ সাপ্লাইয়ের জন্য নির্মিত ভবনটিও মারাত্মক ঝুকিতে রয়েছে। যেকোন সময় নদী গর্ভে বিলীন হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে মধুমতির ভাঙ্গন ঠেকাতে জরুরী ভিত্তিতে টেকসই বাঁধ নির্মান ছাড়া কোন উপায় নেই বলে দাবি করেন তারা।

মোল্লাহাট উপজেলার আটজুড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য লিটন মোল্লা বলেন, চরবাসুরিয়া ও সোনাপুর গ্রামের ফসলি জমিগুলো খুবই উর্বর। প্রতিটি জমিতে তিন থেকে চারটি ফসল হয়। এত উর্বর জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। নদী গিলে খাচ্ছে বসত ঘর, বাপ-দাদার ভিটে মাটি। এই দুই গ্রামের মানুষ ভাঙ্গনের মারাত্মক ঝুকিতে রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড, সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিনসহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে অতিদ্রুত এই এলাকার মানুষের জানমাল রক্ষায় অতিদ্রুত বাঁধ নির্মানের দাবি জানিয়েছেন এই জন প্রতিনিধি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড, বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী বিশ্বজিৎ বৈদ্য বলেন, মধুমতি নদীর ৩ হাজার ৪০০ মিটার এলাকা ভাঙ্গনের ঝুকিতে রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের খূলনা বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীসহ আমি ঝুকিপূর্ণ এলাকা পরিদর্শণ করেছি। এখানে স্থায়ী বাঁধ নির্মানের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। ডিপিপি প্রস্তুতের কাজ শুরু করেছি। এছাড়াও বৃষ্টির মৌসুমে ঝুকিপূর্ণ এলাকায় তাৎক্ষনিকভাবে মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয় বলে জানান এই কর্মকর্তা।

খুলনা গেজেট/ টি আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!