ট্রেড লাইসেন্স নেই। আয়কর সার্টিফিকেট নেই। ভ্যাট সনদের প্রয়োজন নেই। ভবনের প্রয়োজন নেই। রাস্তার ওপরেই মোজাম্মেলের অয়েল মিল। মোবাইল পদ্ধতিতে সপ্তাহের সাত দিন নগরীর চারটি স্থানে বসে অয়েল মিল। ইতিমধ্যেই খাঁটি সরিষার তেল প্রস্তুতকারক হিসেবে মিল মালিক প্রশংসা পেয়েছে।
বাজার ভরে গেছে ভেজালে। শুধুমাত্র মানুষের বিশ্বস্ততা অর্জনের জন্য রাস্তার ওপর চোখের সামনে সরিষা ভাংগিয়ে তেল সরবরাহ করছে। এ মিলের মালিক মোজাম্মেলের চ্যালেঞ্জ ভেজাল প্রমাণ করতে পারলে দশ হাজার টাকা পুরষ্কার। মিল মালিক মোজাম্মেলের বাড়ি কুষ্টিয়ার বারাদি বাজারে। সেখানেও রাজবধু ফুড প্রোডাক্টস নামে একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে তার। সেখানে সরিষার তেল ও নারিকেল তেল উৎপাদন হয়। মোজাম্মেল ইউটিউব থেকে মোবাইল পদ্ধতিতে অয়েল মিলের ধারণা নিয়েছে। দু’বছর হলো এর ওপর পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়েছে। এরপর তার যাত্রা শুরু হয়। ফুলতলা সীমান্তের পশ্চিম পাশের বেজেরডাঙ্গায় রাতে অবস্থান করে, সেখানেই তার বাসা। দিনভর খুলনা নগরীতে কাজ করে ফিরে যান বেজেরডাঙ্গায়।
একটি পিকআপের ওপরেই তার অয়েল মিলের মেশিন বসানো। প্রতি শুক্রবার বয়রা বাজারে, শনি-রবি ও বৃহস্পতিবার ডাকবাংলা মোড়স্থ সোনালী ব্যাংক চত্বরে, মঙ্গল-বুধ নিউমার্কেটে আর সোমবার সোনাডাঙ্গায় রাস্তার ওপরে মেশিন বসিয়ে তেল ভাঙ্গানো হয়। মাঝে মধ্যে ৪ নং ঘাটেও তার এ মেশিন বসে। প্রতিদিন সকাল ৮ টা থেকে সন্ধা ৬ টা পর্যন্ত জেনারেটরের মাধ্যমে এ মেশিন চলে। ১৮-২০ মন সরিষা ভাঙ্গানো হয়, প্রতি লিটার তেলের মূল্য ২২০ টাকা আর ৫ লিটারের দাম ১ হাজার ৪০ টাকা। বাই প্রোডাক্ট হিসেবে আসে খৈল। খৈলের কেজি ৪০ টাকা।
মিল মালিক মোজাম্মেল মন্ডল জানান, সরিষার মন ২ হাজার থেকে বেড়ে ৩ হাজার ১শ’ টাকায় দাঁড়িয়েছে। এখন লাভের পরিমাণ কমেছে। ভ্রাম্যমাণ এ মিলে রাসেল ও রিপন নামের দু জন কর্মচারি রয়েছে। তাদের মাসিক বেতন ১০ হাজার টাকা করে। প্রতি মাসে ভ্রাম্যমান অয়েল মিল থেকে ৫০ হাজার টাকা লাভ হয়। নববর্ষে মিল বন্ধ থাকবে। ঈদের তিনদিন ও বন্ধ। খুলনায় এই প্রথম ভ্রাম্যমাণ পদ্ধতির মিল দেখতে সকাল সন্ধ্যা নারী-পুরুষ ভিড় জমায়। খাঁটি সরিষার তেল সরবরাহে মোজাম্মেল মন্ডলের অয়েল মিল খুলনায় উদাহরণ সৃষ্টি করেছে।
খুলনা গেজেট/কেএম