খুলনা, বাংলাদেশ | ২৪শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৮ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  খুবি থেকে গুম হওয়া দুই শিক্ষার্থী অনিক এবং মুজাহিদ জামিনে মুক্তি
  গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৪৯২
  টাঙ্গাইলে বাস-সিএনজি সংঘর্ষে নারীসহ ৩ জন নিহত
ইউটিউব ভিডিও দেখা থেকে আন্তর্জাতিক রিংয়ের শিরোপা

মেহেরপুরের মুনজুর আলম ‘দ্য হান্টার’ এর বিজয়গাঁথা

গেজেট ডেস্ক

কোনো কোচার কিংবা মেনেজমেন্ট ছাড়া শুধু ইউটিউবে ভিডিও দেখে ফাইটিং শিখে নিজেকে গড়ে তুলেছেন পেশাদার মিক্সড মার্শাল আর্ট (এমএমএ) ফাইটার হিসেবে। অর্জন করেছেন মুয়ে থাই মার্শাল আর্ট আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় জয়ের গৌরব। এ ছাড়া ভারতে মিক্স মার্শাল আর্টে পাঁচবার খেলে জয়ের অর্জন, থাইল্যান্ডে প্রশিক্ষণসহ দেশের মাটিতে একাধিকবার জয়ের অভিজ্ঞতা। সব মিলিয়ে দেশের মার্শাল আর্ট অঙ্গনে নতুন করে আলো ছড়ালেন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার গাড়াবাড়িয়া গ্রামের কৃতিসন্তান পেশাদার এমএমএ ফাইটার মনজুর আলম।

সম্প্রতি ঢাকার চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত প্রথম ‘ডাবল হর্স নকআউট আন্তজার্তিক মুয়ে থাই চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতের আজহারউদ্দীনকে পরাজিত করে তিনি জিতেছেন টাইটেল বেল্ট। আর এতেই সবার কাছে হিরো হয়েছেন মনজুর আলম।

দেশের প্রথম মুয়ে থাই মার্শাল আর্ট আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ, ভারত, থাইল্যান্ড, ইরানসহ মোট পাঁচ দেশের ৩৪ জন এমএমএ ফাইটারদের অংশগ্রহণে টাইটেল বেল্ট জিতে নেন মনজুর।

এই সাফল্য শুধু মনজুর আলমের একার নয়, বরং বাংলাদেশের মার্শাল আর্ট অঙ্গনের জন্য এক বড় অর্জন এবং অনুপ্রেরণার উৎস। মেহেরপুরসহ সারা দেশের তরুণদের মধ্যে এমন সাফল্য নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে বলে মনে করছেন ক্রীড়া বিশ্লেষকরা।

মনজুর আলম বলেন, আমি একজন সাধারণ কৃষক পরিবারের সন্তান। গ্রামের ছেলে হিসেবে মার্শাল আর্টে সার্পেট পাবো এমনটা ভাবা ছিল বোকামি। আর্থিকভাবে সার্পোট না পেয়ে কয়েকজন বন্ধু মিলে প্রথমে ইউটিউবে ভিডিও দেখে মার্শাল আর্ট শেখা শুরু করি। এভাবে প্রায় সাত-আট মাস শিখি। এরপর দেশের বিভিন্ন যায়গায় ছোট ছোট ইভেন্টে যখন সাফল্য আসতে শুরু করে তখন সবাই আমাকে উৎসাহ দেওয়া শুরু করে। পরিবার আমার পাশে দাঁড়ায়। এরপরেই আরও ভালো কিছুর আশায় কোচারের দ্বারস্থ হই। কঠোর পরিশ্রম আর শক্ত মনোবল আমাকে আজকের এই জায়গায় এনেছে। স্বপ্ন এখন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হিসেবে পৃথিবীর দরবারে নিজেকে প্রকাশ করা।

এদিকে ছেলের বিজয়ে গর্বিত মনজুর আলমের বাবা হেলাল উদ্দীন। জানিয়েছেন প্রথমে মার্শাল আর্ট খেলা ভয় পেতাম। পরবর্তীতে বিভিন্ন ইভেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়াতে আমাদের আগ্রহ বেড়ে যায়। এখন ছেলের সঙ্গে দেখা করতে ও ছবি তুলতে বাড়িতে অনেকেই ভীড় করছেন।

এ ছাড়া মার্শাল আর্টে মেহেরপুরের হুসাইন কবিরও মনজুর আলমের অনুপ্রেরণায় খেলছেন। হুসাইন কবির বলেন, মনজুরের সঙ্গে ৫-৬ মাস ট্রেনিং করে বাংলাদেশে কয়েকটি ইভেন্ট জয়লাভ করি। এরপর ঢাকাতে ৯ মাসের ট্রেনিংয়ের পর বেশ কয়েকবার ভারতে খেলে অর্জন করেছি ৩টি গোল্ড মেডেল। এ ছাড়া সম্প্রতি বাংলাদেশে খান নাইটে গোল্ড মেডেল অর্জন করেছি।

মনজুর আলমের কোচার হাবিব পারভেজ বলেন, মনজুর আমার কাছে সাত বছর ট্রেনিং করছেন। তিনি এমন মানের ফাইটার যাকে ডমিনেন্ট করার মতো দেশে আর ফাইটার নেই। বর্তমানে তার দেশের বাইরের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন।

এদিকে টিম ম্যানেজার নাদিম মাহমুদ বলেন, এই খেলার সরকারি তেমন কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই বললেই চলে। কিছু আর্থিক সুবিধা পেলে ও ভিসা জটিলতা সহজ হলে খেলোয়াররা দেশ এবং দেশের বাইরে ভালো ফলাফল করবেন।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!