আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে মেহেরপুরের গাংনীতে বিশাল আকৃতির একটি গরু প্রস্তুত করা হয়েছে। নজরকাড়া ফ্রিজিয়ান জাতের গরুটির ওজন ২১ মণ। দুই বছর ধরে গরুটিকে নিজের সন্তানের মতো লালন-পালন করেছেন গাংনী উপজেলার মোহাম্মদপুর পূর্বপাড়ার শাহারুল ইসলাম। দেখতে কুচকুচে কালো হওয়ায় গরুটির নাম রেখেছেন ‘কালামানিক’।
দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা কালামানিকের ঘরে চলে ফ্যান। গোসল করানো হয় দিনে দুই-তিন বার। কালামানিকের নিয়মিত খাবারে মধ্যে রয়েছে খৈল, কাঁচা ঘাস, বিচালি, ভুট্টার ময়দা, চালের কুড়া। পরম যত্নে পালিত কালামানিক জেলার সবচেয়ে বড় গরু বলে দাবি শাহারুল ইসলামের। তিনি গরুটির দাম হাঁকছেন ২৫ লাখ টাকা।
শাহারুল ইসলাম বলেন, জেলার মধ্যে বড় গরু কালামানিক। দুই বছর ধরে গরুটিকে পালন করছি। কেমিক্যাল জাতীয় খাবার না খাইয়ে আমি ভুসি, গমের ছাল, কাঁচা ঘাস, বিচালি খাওয়াই। খাবারের দাম অনেক বেশি। তাই কোরবানির ঈদ উপলক্ষ্যে গরুটি বিক্রি করে একটু লাভের আশা করছি। এতো বড় গরু একা পালন করা সম্ভব হয় না । তাই স্ত্রী ও ছেলে সব সময় আমাকে সহযোগিতা করে। প্রাণিসম্পদ অফিসও আমাকে সহায়তা ও বিভিন্ন পরামর্শ দেয়।
এদিকে কালামানিককে খাওয়ানো, গোসল করা থেকে শুরু করে পরম আদর যত্ন করেন শাহারুলের ছেলে সামিউল। আর এ কারণেই তাদের মধ্যে গড়ে উঠেছে মধুর সম্পর্ক।
সামিউল বলে, বাইরের কেউ গরুর কাছে গেলে রেগে যায়। তবে আমি গেলে শান্ত হয়ে যায়।
নিজের সন্তানের মতো যত্নে বড় করা কালামানিককে আসন্ন কোরবানিতে ২৫ লাখ টাকায় বিক্রি করতে চান শাহারুলের স্ত্রী বিলকিস খাতুন। তিনি বলেন, স্বামী বাইরে কাজে গেলে আমি কালামানিককে দেখাশোনা করি।
শাহারুলের ভাই জিনারুল বলেন, বড় ভাই দুই বছর ধরে যত্ন করে গরুটিকে বড় করেছেন। ঈদকে কেন্দ্র করে অনেকেই গরুটিকে দেখত আসছে। অনেকে আশানুরুপ দাম বলেছে। আমিও এমন একটি গরু এবার পালন করতে চাই।
প্রতিবেশী দুলাল মিয়া বলেন, কোনো ধরনের ক্ষতিকারক বা হরমোন জাতীয় ওষুধ ব্যবহার না করে দেশীয় খাবার বিচালি, চালের কুড়া, খৈল, কাঁচা ঘাস খাইয়ে শাহারুল গরু লালন-পালন করেছেন। কোরবানি ঈদে দাম ভালো পেলে এলাকার অনেকেই কালামানিকের মতো এমন গরু পালন করতে চান।
মেহেরপুর প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা ডা. সুব্রত কুমার ব্যানার্জী বলেন, কোরবানির ঈদ উপলক্ষ্যে শাহারুল যে গরুটি লালন-পালন করেছেন তা জেলার মধ্যে অন্যতম একটি বড় গরু। বাণিজ্যিক ও প্রান্তিক খামারিদের সার্বিক পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন সহযোগিতা করা হচ্ছে।
খুলনা গেজেট/এএজে